আব্দুন নুর তুষার: কিছু ফেসবুক পেজ ও তাদের অ্যাপনির্ভর সেবা বাংলাদেশে বসে ভারতীয় ডাক্তারদের ভিডিও কনসাল্টেশনের নামে ২০০০ - ৩০০০ করে টাকা নিচ্ছে।
এটা শুধু বেআইনী নয়, এটা জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক।
১. ভিডিওতে যিনি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি বাংলাদেশের আইন ভংগ করছেন।
বিএমডিসি আইনে বাংলাদেশের ভূখন্ডে যে কোন চিকিৎসা পরামর্শ দিতে হলে চিকিৎসককে তার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার প্রমাণ জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতি নিতে হবে।
যেহেতু এই সেবা বাংলাদেশের ভূখন্ডে দেয়া হচ্ছে তাই এটার জন্য সেই ভারতীয় বা যে কোন দেশীয় ডাক্তারের বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
২. তিনি যে টাকা নিচ্ছেন তার কর দিতে হবে। তার অনুমতি গ্রহণের জন্য সরকারী অফিসে ফী জমা দিতে হবে।
এসব তারা করছেন না।
৩. এই ডাক্তার যে আসল ডাক্তার তার কোন প্রমাণ নাই। ফলে যে কোন প্রতারক দল চাইলে দেশে বসেই শাহরুখ খান বা সুনীল শেঠী হয়ে চিকিৎসা দিলে তাদের ধরার কোন উপায় নাই। ভুয়া হাসপাতালের ওয়েবসাইট খুলে সেখানে ছবি দিয়ে এখানে টেলিমেডিসিন এর নামে ভুয়া পরামর্শ দিয়ে টাকা নিলে প্রতি ১০০ জনে দুই থেকে তিন লাখ টাকা। আর কোন ব্যবসায় এটা সম্ভব?
৪. টেলিমেডিসিন সেবার জন্যও সরকারী নীতিমালা আছে। এরা সেটাও মানছে না।
৫. নেটফ্লিক্স যদি অনুমতি নেয়, কর দিতে বাধ্য হয় তবে এই সব ভারতীয় ডাক্তার কেন কর দেবে না?
৬. এই টাকা ভারতের ডাক্তারের কাছে যায় কোন পথে? বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে যায়?
৭. বলা হচ্ছে কনসালটেশনের সময় একজন দেশী ডাক্তারও নাকি থাকবেন জুমে বা অ্যাপে। এই ডাক্তাররা যদি সত্যিই ডাক্তার হয়ে থাকেন তবে তারা নিজেরা আইন ভাঙ্গছেন। বেআইনী কাজে সহায়তা করছেন। তাদের পরিচয় কি? তারা যে আসলে ডাক্তার তার প্রমাণ কি?
৮. এরা যেসব বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন সেসবের অনেকগুলিরই চিকিৎসার জন্য ভারত যেতে হবে। নিউরোলজিকাল পরামর্শ নিউরোলজিকাল এক্সামিনেশন , অন্তত হ্যামার দিয়ে রিফ্লেক্স না দেখে সম্ভব?
সার্জারী লাগলে সেটা কোথায় হবে? বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, আইভিএফ এসব নিয়ে যেসব পরামর্শ হবে সেটা আসলে রোগী নিয়ে যাওয়ার কথাবার্তা। কোন চিকিৎসা পরামর্শ না বরং ট্রাভেল পরামর্শ।
৯. বাংলাদেশে কোন কোন ডাক্তার তাদের পরামর্শের ফি ৩০০০ নেন ? আছেন কেউ? এই বিদেশী ডাক্তাররা কোন সোনারুপার বই পড়েছেন যে তাদের ফি ৩০০০?
বিদেশী এইসব চিকিৎসকদের যথাযথ কর না দেয়া , অর্থ পরিশোধের স্বচ্ছতা না থাকা ও অনুমতিবিহীণ চিকিৎসা সেবাপ্রদানের মাধ্যমে আইনভঙ্গ করার জন্য রাষ্ট্রের একজন সংক্ষুব্ধ নাগরিক হিসাবে আমি বিএমডিসি, স্বাস্থ্য বিভাগ, ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কাছে জানতে চাই তারা আমাদের অধিকার রক্ষায় ও নিরাপত্তায় কি ভূমিকা পালন করছেন?
বেতন টা হালাল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন কোন এক ব্যক্তি যেন?
এইসব অন্যায় থেকে আমাদের রক্ষা করে নিজেদের বেতনটা হালাল করেন।
প্লিজ ড্যুড।
ছবিটা বিভিন্ন জায়গায় ঢেকে দিয়েছি যাতে এই পোস্ট দিয়ে তাদের প্রচারণা না হয়।
(লেখকের ফেইসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহিত)
আপনার মতামত লিখুন :