মমতাজুর রহমান:[২] প্রচন্ড তাপদাহে হাঁসফাঁস অবস্থায় একটু স্বস্তি পেতে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় কদর বেড়েছে তাল শাঁসের। তীব্র গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তাই গরম থেকে স্বস্তি পেতে ভিড় করে মানুষ তালের এই শাঁষ খাচ্ছেন। কারন কচি তালের শাঁস যেমন পুষ্ঠিকর তেমন প্রশান্তিদায়ক।
[৩] বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন হাট-বাজারের মোড়ে বিক্রেতারা এখন হরদমে বিক্রি করছে তালের শাঁষ। এছাড়াও ভ্যান যোগে ভ্রাম্যমান তাল শাঁষ বিক্রেতাদের সংখ্যাও কম নয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় শতাধিক মৌসুমি শ্রমিক তালের শাঁষ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার অনেক ক্রেতাই পরিবারের সদস্যদের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তালের শাঁস। বর্তমানে প্রতিটি তাল শাঁস ১২/১৫ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
[৪] সান্তাহার স্টেশন রোডে তালের শাঁস বিক্রেতা সান্দিড়া গ্রামের হাসান (৩০), রেলগেটে এলাকায় বাবুল (২৫) ও আদমদীঘি সদরে শিপলু (২৪) জানান, একটি গাছের তাল ৮শত থেকে ১ হাজার টাকায় কিনেছেন। গাছ থেকে তাল নামাতে লেগেছে ৫০০ টাকা এবং ভাড়া করে নিয়ে আসা বাবদ লেগেছে ২০০ টাকা। সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া গ্রামের হাসান পেশায় রিকসা চালক। এই মৌসমে সে তালের শাঁস বিক্রি করছে। তিনি আঞ্চলিক ভাষায় জানালেন, ’রোদের মদ্দ্যে রিকসা চালালে জানডা বার হয়া যায়, তাই হামি এই টাইমে তালের শাঁস বেচি। আয় ভালোয় হয়।
[৫] এক দেড় মাস এই ব্যবসা চলে। এই টাইমে হাজার পনের টাকা মতো আয় হবে।’উপজেলার কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা যায়, সৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে একটু শান্তির পরশ পেতে ভিড় করছেন তাল শাঁস বিক্রেতাদের কাছে। গত বুধবার উপজেলার চাঁপাপুর, নশরৎপুর, আদমদীঘি, সান্তাহারের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে মৌসুমি তাল বিক্রেতারা তালের শাঁস বিক্রি করছে।
[৬] সান্তাহরের নাহার মেডিকেয়ারের মেডিসিন বিশেষঞ্জ ডাঃ হামিদুর রহমান জানান, তাল শাঁস পুষ্ঠিকর, প্রশান্তিদায়ক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধীকারী জানান, চলতি মৌসুমে তালের ফলন ভাল হওয়ায় বিক্রেতারা এই মৌসুমে ব্যবসা ভাল করবে আশা করি। এই ফল স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলে জানি। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তালের গাছ বেশি বেশি করে লাগাতে হবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে বলে আমি মনে করি।