মঞ্জুরে খোদা টরিক: অনেক কিছুই লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু সময়ের কারণে হয়ে ওঠে না। এটাও একটা বাড়তি ক্ষরণ। লিখলেই কিছু হয়ে যাবে বিষয়টা এমন না, কিন্তু নিজের কথাটা তো বলা হবে, একটা বিভ্রান্তির ও প্রপাগান্ডার জবাব তো হবে সে জন্যই লেখা দরকার। যাইহোক। আমি না বললেও কেউ না কেউ সে কথা বলে। মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার কয়েক শব্দে সে কথাগুলো বলেছে। তার বলাগুলো এতো নির্মোহ নিরস যে তা অনেকেই নিতে পারেন না। প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রসঙ্গে তাই তার চারটি পয়েন্ট ধার নিলাম। কেন এ কথাগুলো বলছি, সামাজিক মাধ্যম ও পত্রিকায় প্যালেস্টাইন নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটা লেখা চোখে পড়েছে। তার বিষয়গুলো এমন [১] বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইলে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পূর্বের মতো আর উল্লেখ নেই। তার পক্ষে এক ধরণের নৈতিক বৈধতা উৎপাদন করা [২] ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিদায়ে অনেক ডান-বামের লেখা মন্তব্যে তাদের বিজয়ের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হলো তারা ভুল জানেন ও ভুল প্রচার করছেন অথবা মিথ্যা আত্মসন্তষ্টি লাভের চেষ্টা করছেন। ইসরাইল প্যালেস্টাইনের সঙ্গে এ যাবতকাল যা করেছে তা মহাঅন্যায় ও অনৈতিক কাজ। সে বিষয়কে যারা তুলনা মূলক রাজনৈতিক উন্নয়ন ও সমীকরণের ফর্মুলায় ফেলে ইসরাইলের কর্মকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছেন তারা হয় মূর্খ না হয় শয়তান। কেউ কেউ প্যালেস্টাইন ঈসরাইল সমস্যা ও বিষয়কে এমনভাবে উপস্থাপন করছেন যে, এটা মহাজটিল একটি বিষয়, এটা সাধারণের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। এটা বুঝতে বিশ্ব রাজনীতির মহাপন্ডিত ও ইতিহাসবীদ হতে হবে না হলে এ জটিল সমীকরণ বোঝা সম্ভব নয়। বিষয়টা কী আসলেই তাই?
বিষয়টা ভেরি সিম্পল। কোনো কথা নেই, একটা লোক এসে আমার বাড়ি থেকে আমাকে মেরেকেটে বের করে দিয়ে সে বাড়ী দখল করে নিলো। আমাকে শুধু বের করেই দিলো না, আমাকে তার আশেপাশে থাকতে দিচ্ছে না, আমাকে লাথি গুতা নিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছে, আটকে রাখছে। আমার ওপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার-নির্যাতন করছে, আর কিছু প্রভাবশালী লোক সেই অপকর্মকে সমর্থন করছে, তাতে অন্যায়কারী আরো বেপরোয়া হচ্ছে। এই তো ঘটনা তাই না? এর চেয়ে বেশি কিছু কি? ইসরায়েল প্যালেস্টাইন সংকট প্রসঙ্গে বাংলাদেশি ডান-বামের এক অংশ ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর পতনে প্যালেস্টাইনের বিজয় মনে করেছেন। কী ভয়ংকর নির্বুদ্ধিতা হতে পারে ভেবে দেখুন নেতানিয়াহু হচ্ছে একটা হায়েনা আর তার চাইতেও দশ গুন উগ্র হায়েনা হচ্ছেন নতুন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত। আর এই পরিবর্তনকেই প্যালেস্টাইনের বিজয় মনে করছেন এক শ্রেণির ডান ও বামপন্থী। প্রকৃত অর্থে প্যালেস্টাইনের জনগণের বিজয় হবে
[১] যেদিন প্যালেস্টাইনের ভূমি থেকে ইসরায়েল তার সেটেলারদেরকে সরিয়ে নিয়ে যাবে।
[২] যেদিন প্যালেস্টাইনের ভূমি থেকে চিরতরে ঈসরাইলি চেকপোস্ট গুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, উঠিয়ে নেওয়া হবে।
[৩] যেদিন প্যালেস্টাইনী জনগণ জাতি ও ধর্ম-নির্বিশেষে নিজের ভূমির ওপরে আবার অধিকার ফিরে পাবে।
[৪] যেদিন প্যালেস্টাইনীদের সীমান্ত রক্ষা করবে প্যালেস্টাইনীরা। ইসরায়েলের সরকার পরিবর্তন প্যালেস্টাইনীদের বিজয় নয়, ইহুদী জাতিরাষ্ট্র ও ইহুদী দখলদারিত্বের সবচাইতে গোঁড়া সমর্থক লোকটি যখন সরকার গঠন করছে তা প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠনের আরো বড় বিপদ তৈরি করছে। প্যালেস্টাইনের বিজয় হচ্ছে মাতৃভূমির প্রকৃত স্বীকৃত অধিকার ফিরে পাওয়া। প্যালেস্টাইনীদের সেইদিনই প্রকৃত বিজয় হবে যেদিন যে কোন প্যালেস্টানিয়ান গায়ে হাওয়া লাগিয়ে তাদের সড়ক ধরে স্বাধীন ভাবে হাঁটতে পারবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :