সুজন কৈরী: রাজধানীর মিরপুরের মনিপুর এলাকায় শুক্রবার সকালে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ৩ জন সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-৪। আটকরা হলেন- মইনুর রশিদ চৌধুরী (৩৫), জিয়াউর রহমান ওরফে মুন (৩২) ও আফসানা জান্নাত ওরফে লিজা (২২)।
র্যাব জানিয়েছে, তারা শিক্ষিত বেকার তরুণ তরুণীদের চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে প্রতারণা করছিলেন। প্রতারণার কৌশল হিসেবে তারা রাজধানীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতেন। এক পর্যায়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে, বিভিন্ন দপ্তরের তদবিরের মাধ্যমে বিদেশি প্রজেক্ট দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করতেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৪ জানিয়েছে, আটক মইনুর হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানাধীন রুদ্রগ্রাম এলাকায় জম্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় একটি কলেজে এইচএসসি অধ্যয়নরত অবস্থায় পড়ালেখা বাদ দিয়ে ১৯৯৮ সালে মধ্য প্রাচ্যের দেশে চলে যান। চার বছর সেখানে থাকেন। এরপর দেশে ফিরে ২০০২ সালে তিনি রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকায় একটি সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানীতে সুপার ভাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। চার মাস থাকার পর ‘কনফিডেন্স সিকিউরিটি সার্ভিস’ নামে তিনি নিজেই একটি লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। পরে ‘হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন’ নামক একটি মানবাধিকার সংগঠনের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। সংগঠনে থাকার সুবাদে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় নামে বেনামে বিভিন্ন ভুইফোর সংগঠন পরিচালনা করে। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেন। চাকরির প্রলোভন, সরকারি দপ্তরে তদবির, বিদেশি প্রজেক্ট দেখিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও ‘এশিয়ান হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন’ নামক মাগুরা সদরের ভায়নার মোড় এলাকায় তাদের অফিস ছিল যা আটক অপর দুজন চালাতেন।
আফসানা জান্নাত ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়ে তা চক্রের প্রধান মইনুরের কাছে পাঠাতেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা যায়, মইনুরের বাসা এবং অফিসের ঠিকানায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যায়। কাউকে চাকরির কথা বলে টাকা নেয়া, কাউকে বিদেশ পাঠানো, কারো কাছ থেকে বিনিয়োগ নিয়ে লাপাত্তা ও লোকজনকে ঠকানোই ছিল তার কাজ।
মইনুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণা সংক্রান্ত অসংখ্য জিডি ও অভিযোগ রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।