সুজন কৈরী : [২] ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের আরও ৮টি মার্কেট জরিপ করে দেখেছে ৮৮ শতাংশ দোকান ভ্যাট দেয় না। জরিপে ১ হাজার ২৪টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক তথ্য সংগ্রহ করে এ চিত্র পাওয়া যায়।
[৩] শুক্রবার ভ্যাট গোয়েন্দা জানিয়েছে, সংস্থার তিনটি দল বৃহস্পতিবার ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের ৮টি মার্কেটে জরিপ চালায়। জরিপের তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র ফুটে ওঠেছে।
[৪] গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক তানভীর আহমেদ নারায়ণগঞ্জে, সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন ঢাকায় এবং সহকারী পরিচালক মালেকীন নাসির আকন্দ সাভারের জরিপ কাজে নেতৃত্ব দেন। তিনটি দলে ৪২ জন গোয়েন্দা কর্মকর্তা অংশ নেন।
[৫] জরিপ চালানো ৮টি মার্কেট হলো- নারায়ণগঞ্জের মার্ক টাওয়ার, সমবায় নিউ মার্কেট, সায়েম প্লাজা, আল হাকিম (পপুলার) সেন্টার, সাভারের সিটি সেন্টার, ঢাকার উত্তরায় ট্রপিকাল আলাউদ্দীন টাওয়ার, আরএকে শপিং কমপ্লেক্স এবং বাড্ডায় সুভা¯‘ নজর ভ্যালি।
[৬] মোট ১ হাজার ২৪টি দোকানে জরিপ চালানো হয়। এর মধ্যে মোট ভ্যাট নিবন্ধিত দোকানের সংখ্যা ১২০টি, ভ্যাট দেয় না ৯০৪টি দোকান।
[৭] জরিপ অনুসারে ভ্যাট নিবন্ধিত ১২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাসে ৫ হাজার টাকার উপরে ভ্যাট দেয় মাত্র ৪৫টি। বাকি ৭৫টি ৫ হাজার টাকার নিচে ভ্যাট দেয়। অথচ জরিপের ফল অনুযায়ী এদের অধিকাংশের দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খরচ ও মুনাফা অনুযায়ী এই পরিমাণ ভ্যাট সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে প্রমাণ মিলেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পেয়েছে, বেশির ভাগ দোকান ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে। কিন্তু তারা যথাযথভাবে সরকারের কোষাগারে ভ্যাট পরিশোধ করে না।
[৮] মাঠ পর্যায়ের এই জরিপে আরও দেখা যায়, কোনো কোনো মার্কেট গড়ে উঠেছে দশ বছরের বেশি সময় আগে। মার্কেটের দোকানগুলোও একই সময়ের। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হয়েছে দুই বছর হলো। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও জরিপে প্রাপ্ত ৮৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের আওতায় আসেনি। তবে সুভাস্থ নজর ভ্যালিতে ঢাকা উত্তর কমিশনারেট থেকে বৃহস্পতিবার ৫০০ দোকানকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন দিয়ে তা মার্কেটের নিচে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
[৯] জরিপ প্রতিবেদন বলছে, মার্কেট থেকে ভ্যাট সংগ্রহে রাজধানীর চেয়ে ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাট দেওয়ায় অনীহা বেশি। এসব এলাকায় ভ্যাট আইন পরিপালন অপেক্ষাকৃত কম।
[১০] জরিপের এই ফলাফল এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন আকারে জমা দেবে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এর ওপর ভিত্তি করে এনবিআর কর্মকৌশল নির্ধারণ করবে। ভ্যাটযোগ্য ব্যবসাকে করের আওতাভুক্ত করা এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই জরিপ পরিচালিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :