শিরোনাম
◈ ধামরাইয়ে বিশেষ অভিযানে ৩১লাখ টাকার হেরোইন সহ গ্রেপ্তার ৩।  ◈ হ্যান্ডশেক বিতর্কে ৪৮ ঘণ্টা পর পাকিস্তানের অভিযোগ উড়িয়ে কড়া জবাব দি‌লো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ◈ বিশ্বকাপ বাছাই‌য়ে ইসরায়েলের বিরু‌দ্ধে ম্যাচের টিকিট বিক্রির টাকা ফিলিস্তিনে দান করবে নরওয়ে ◈ জাতিসংঘের এলডিসি উত্তরণের পথে বাংলাদেশ, সতর্ক থাকবার বার্তা তারেক রহমানের ◈ নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না: সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ গণআন্দোলন রুখতে কড়া প্রস্তুতি: গবেষণায় নামছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ◈ জাপানে জনশক্তি রপ্তানিতে নতুন উদ্যোগ: ‘জাপান ডেস্ক’ চালু, ভাষা প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানে বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা ◈ চূড়ান্তভাবে একীভূত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বসছে প্রশাসক ◈ ফরিদপুরে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে অসন্তোষ, যা বলছেন ইসি সচিব ◈ পুলিশের ৯ কর্মকর্তাকে যে কারণে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল
আপডেট : ২৫ মে, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তুষার আবদুল্লাহ: মনোরম লকডাউন!

তুষার আবদুল্লাহ: আবার একটি মনরোম লকডাউন এলো। অবশ্য এলো বলা যাবে না। বলা উচিত বর্ধিত হলো। ঈদের আগে থেকেই লকডাউন চলছিল। বিপণিবিতান খুলে দিয়ে, উড়োজাহাজ খুলে দিয়ে, ফেরিঘাট উন্মুক্ত রেখে। পরে খোলা হয় আন্তঃগণপরিবহন। এই দফায় সকল প্রকার গণপরিবহন খুলে দেওয়া হলো। রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়াও যাবে। শর্তটাও বেশ মনরোম-সীমিত পরিসরে। করোনাকালজুড়ে সীমিত পরিসরের ছুঁতোয় সবই চলেছে। গণপরিবহন চলেছে রাতের আঁধারে। কেবল বন্ধ ছিলো রেল-লঞ্চ। বন্ধ থাকেনি খাওয়া-দাওয়া। বন্ধ রয়েছে শুধু বিদ্যায়তন। কিন্তু যাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বন্ধ বিদ্যায়তন, সেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে নেই। বিপণিবিতান, রেস্তোরাঁ, বিনোদন কেন্দ্র সর্বত্রই তাদের ভিড় ছিলো, আছে। আর সীমিত পরিসরে কাজ করে যাচ্ছেন, সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা। ঘরে বসে অফিস করছেন তারা।

ঘরে বসে অফিস করতে গিয়ে, দপ্তরে নথির পাহাড় জমছে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতার নিরসন হচ্ছে না। ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের। কল-কারখানা, ব্যাংক, বেসরকারি অফিস-সেবা সংস্থা চালু রেখে, সরকারের কতিপয় কর্মচারী, কর্মকর্তার অবকাশ যাপন কেন? শুধুমাত্র বয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্তরা ছাড় পেতে পারেন। আর যদি লকডাউন খাঁটি হয়, তবে তার সঠিক প্রকৃতি অনুসরণ করে সকলকেই ঘরে রাখতে হবে। আমাদের সন্তানরা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে হয়তো পড়ালেখার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু মনঃযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাঠে তাদের মনোযোগ নেই। অভিভাবক-শিক্ষকদের যৌথ চেষ্টাতেও পাঠে আনন্দ ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। স্কুলে পড়ালেখা, শৃঙ্খলার কঠোরতার বাইরেও যে বিদ্যায়তনে আনন্দলোক আছে, সেটা আমরা স্কুল, কলেজ পেরোনো সকলেই জানি। শুধু বন্ধু, স্কুলের টিফিন, মাঠে খেলাধুলা করাই নয়, কখনো কখনো ক্লাসের টেবিল, বেঞ্চ, ব্ল্যাকবোর্ড, করিডোর, স্কুল মাঠের গাছ কিংবা শুধু ঘণ্টা শোনার জন্যেও মন ছুটে যায় স্কুলে। আমি নিজেও পুত্রকে প্রায় মধ্যরাতে নিয়ে গেছি স্কুলে। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে কি মায়া চোখে ও দেখছিলো স্কুলটাকে। গেট, দরজা স্পর্শ করা দেখে, মনে হচ্ছিল কতোদিন পর আপন কাউকে ছুঁয়ে দেখলো।

বিদ্যায়তনে না গিয়ে শিশুদের মধ্যে যে অবসাদ কাজ করছে, তার মাশুল আমাদের দীর্ঘদিন গুনতে হবে, শিক্ষার ক্ষতি তো আছেই। নাগরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্র বা সরকার নিতেই পারে। কিন্তু তার বাস্তব ঘনিষ্ঠতা থাকা দরকার। ঘরের সকল দরজা-জানালা খুলে দিয়ে, বাইরের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখা কোনো বুদ্ধিমান গৃহস্থের কাজ নয়। বাইরে তালা ঝুললেও দরজা-জানালা খোলা থাকায় চোর প্রবেশের ঝুঁকি রয়েই যায়। শুধু কতিপয় সরকারি কর্মচারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা দরকার, আর কারো প্রয়োজন নেই এমন ভাবলে চলবে না। বিদ্যায়তনও পরীক্ষামূলকভাবে ধীরে ধীরে খুলে দেয়ার কথা ভাবতে হবে। সেশন জট এমনিতেই বাধতে শুরু করেছে। আমাদের সকলকেই স্মরণে রাখতে হবে, যেটা বহুবার বলা হচ্ছে করোনাকাল সীমিত থাকছে না। দীর্ঘ হবে, সুতরাং ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনকে সেভাবেই অভ্যস্ত বা সাজিয়ে নিতে হবে। মনোরম লকডাউন এক্ষেত্রে কোনো সমাধান নয়, বরং জীবনের জটিলতা বাড়াবে। লেখক : লেখক ও সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়