রহিদুল খান : [২] করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত যশোর। গোটা দেশের ন্যায় যশোরেও ছড়িয়েছে ভয়াবহ এ ভাইরাস। গত এক বছরে সাড়ে ছয় হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এসময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৭ জন। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ সদর উপজেলায় ও সবচেয়ে কম বাঘারপাড়ায়। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
[৩] সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, করোনা দুর্যোগে গোটা দেশের ন্যায় যশোর জেলার পরিস্থিতিও বেহাল হয়ে পড়েছে। ২০২০ সালে ১০ মার্চ থেকে চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত যশোরে ছয় হাজার ৬শ’ ৪১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরা সবাই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে বা যশোর হাসপাতালের করোনা ডেডিকেডেট ইউনিট রেডজোনে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছয় হাজার ২শ’ ৯০ জন। আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৫৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৬ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৭ জন। এসব মৃত্যুর মধ্যে ৬ জন মারা গেছেন ঢাকায়, ৪ জন খুলনায় ও ৩ জন অন্য জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এরা সবাই যশোরের অধিবাসী। এছাড়া একই সময়ে হোম
[৪] কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ১৫ হাজার ৩শ’ জন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ১৮ জনকে করোনা নেভেটিভ ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বাকিরা পজিটিভ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় যশোরে ৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে ১৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫ জনের, খুলনায় ১০টি নমুনা পরীক্ষায় ১ জনের ও যশোর হাসপাতালে র্যাপিড এন্টিজেন্ট পরীক্ষায় আরো ৬ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে।
[৫] সূত্র জানায়, গোটা জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ও বাঘারপাড়া উপজেলায় সবচেয়ে কম। সদর উপজেলা এলাকায় মোট শনাক্তের সংখ্যা চার হাজার ৪২৮ জন। এছাড়া, অভয়নগর উপজেলায় ৬২৭ জন, বাঘারপাড়ায় ১২৯ জন, চৌগাছায় ২১০ জন, ঝিকরগাছায় ৩৫৯ জন, কেশবপুরে ২৮৯ জন, মণিরামপুরে ২১১ জন ও শার্শায় ৩৮২ জন।
[৬] যশোরে করোনার সার্বিক এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ভারত থেকে আসা মানুষের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে জেলা প্রশাসনও ব্যাপকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে ভারতফেরত ৫ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন। এ সংক্রান্ত তথ্য ইতিমধ্যে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয় ও আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন। ফলে সীমান্তবর্তী জেলা যশোর বর্তমানে করোনার রেডজোনে পরিণত হয়েছে।
[৭] এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন আবু শাহীন বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগ যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে বেশি সমস্যা হচ্ছে ভারতফেরতদের নিয়ে। তাদের জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতালসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। এসব স্থানে তাদের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়া হচ্ছে।
[৮] এছাড়া এখানে করোনা শনাক্তকৃতদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডজোনে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। এছাড়া শহরের বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ও শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এআরটিপিসিআর ল্যাবে স্থাপন করে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :