রাশিদ রিয়াজ : গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ব্রিটেনে বেকারত্বের হার ছিল ৪.৮ শতাংশ। কোভিড মোকাবেলায় টিকাদান কর্মসূচি বেশ সফল হওয়ার পর এপ্রিল থেকে বাড়তে শুরু করে নিয়োগ। লকডাউনের কড়াকড়ি কমে যাওয়ায় নতুন করে কর্মী নিয়োগ দিতে শুরু করেছেন দেশটির নিয়োগকর্তারা। রয়টার্সের জরিপ বলছে, ব্রিটেনে বেকারত্বের হার ৪.৯ শতাংশে স্থির হতে পারে। বরং ইউরোপের ২৭টি দেশে ছুটি কাটাতে ব্রিটেনের নাগরিকরা যেতে শুরু করায় অর্থনীতি আরো সচল হয়ে উঠছে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শ্রম বাজারে যে অস্থিরতার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ব্রিটেন তা থেকে বেরিয়ে আসছে। সরকারের প্রয়োজনীয় ভর্তুকির কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। গত বছর প্রথম লকডাউনের সময় বেকারত্বের উচ্চহারের মত এবারও লকডাউনেও একই ধরন দেখা যায়। পুরুষের মধ্যে বেকারত্বের হার রেকর্ড করে এবার। শ্রম বাজার মূলত সরকারের বাধানিষেধ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। একই সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচিতে ব্রিটিশ নাগরিকরা সাবলীলভাবে সাড়া দেওয়ার কারণে সরকারের পক্ষে লকডাউন শিথিল করা সম্ভব হচ্ছে। কেপিএমজি ইউকে’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ায়েল সেলফিন বলেন, অর্থনীতি যেহেতু পুরোদমে খুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসাগুলোতে আবারো কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে কর্মী নিয়োগ হয়েছে ৮৪ হাজারের বেশি। রয়টার্স এর আগে আভাস দিয়েছিল এই সংখ্যা ৫০ হাজার হতে পারে।
গত ৫ মাসে টানা পে’রোল কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে তা এখনো কোভিড পূর্ব সংখ্যার চেয়ে নিচে রয়েছে এবং এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭২ হাজারে। যারা এখনো টিকা নেননি তারা তা নিতে উদগ্রীব হয়ে পড়ছেন। টিকা নিয়ে শঙ্কা কেটে গেছে। গত তিন মাসে বেতন প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হলেও বেড়েছে ৪ শতাংশ। ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ ড্যারেন মরগান বলেন অর্থনীতির গতি যে সচল হয়ে উঠছে তার অন্যতম সূচক হচ্ছে কাজের চাহিদা ও নিয়োগ দুই বাড়ছে। গত নভেম্বর থেকে এ ধারা এপ্রিলে আরো শক্তিশালী হয়েছে। সেবা ও বিনোদনখাতগুলো বিশেষভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এবছর প্রথম ত্রৈমাসিকে ৮৪ হাজার মানুষ কাজ পুনরায় কাজ শুরু করতে পেরেছে। ফলে বেকার লোকের সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ২১ হাজার। ব্রিটেনে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকরাও এখন টিকা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে এবং এর ফলে কর্মচাঞ্চল্য আরো বৃদ্ধি পাবে। লকডাউনের ফলে কম আয়ের কাজ ও পার্টটাইম কাজের সংখ্যা কমে আড়াই শতাংশে নেমে গিয়েছিল। এখন সে পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ সারেন থিরু বলেন বেকারত্বের হার হ্রাস ও পে’রোলে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি বলে দিচ্ছে ব্রিটেনের শ্রমবাজার ফের চাঙ্গা হয়ে উঠছে। এখন প্রয়োজন ব্যবসায়ীদের চলতি মূলধন সংকট কাটিয়ে উঠতে নগদ সহায়তা প্রদান যা সম্ভব হলে ব্রিটেনের অর্থনীতি আরো গতি ফিরে পাবে।