এস এম সাব্বির :[২] জেলার মানিকদহ চরমানিকদাহ গ্রামে আসামী ধরতে না পেরে আসামীর ছেলে ও পুত্রবধুকে বেধড়ক পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এসময় ওই দম্পতির ৩ মাসের শিশু-সন্তানকেও ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
[৩] এমন অমানবিকতা দেখে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গোপালগঞ্জ থানার দুই পুলিশ সদস্যকে প্রায় আধা ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৯টার দিকে সাদা-পোশাকে এএসআই সাইদুল ও এসআই অজিত নামে দু’ পুলিশ-সদস্য চরমানিদকাহ কাজীর বাজার এলাকার কাইয়ুম মোল্লাকে ধরতে তার বাড়িতে যায়। টের পেয়ে কাইয়ুম কৌশলে সরেপড়ে।
[৪] এতে এএসআই সাইদুল রাগান্বিত হয়ে কাইয়ুমের ছেলে ইনছান মোল্লাকে (২৫) বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটান।এসময় ইনছানের স্ত্রী আসমা ঠেকাতে গেলে তাকেও লাথি মেরে ফেলে দিয়ে মারপিঠ করেন এবং তার কোলে থাকা শিশু-সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলেন।
[৫] এ দৃশ্য কয়েকজন মোবাইল ফোনে ধারণ করলে এএসআই সাইদুল তাদেরকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং ধারণকৃত সব দৃশ্য মুছে ফেলেন। এসময় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দু’ পুলিশ-সদস্যকে প্রায় আধাঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তারা মোটর-সাইকেল রেখে কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
[৬] এদিকে থানা থেকে অন্য পুলিশ গিয়ে আহতদেরকে এনে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান আসামীর স্ত্রী নুপুর বেগম।হাসপাতালে ভর্তি আহত আসমা অভিযোগ করে বলেন, গেঞ্জি ও জামা (হাফ শার্ট) পরিহিত দুইজন লোক বাড়িতে এসে পুলিশ পরিচয় দেয়। তারা আমার শ্বশুরকে ধরতে এসেছে বলে জানায়। শ্বশুরকে ধরতে না পেরে তারা আমার স্বামীকে বাঁশ দিয়ে পেটাতে থাকে।
[৭] আমি কিছু বুঝতে না পেরে ওই পুলিশের পা জড়িয়ে ধরি। তখন তিনি আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে আমার কোলে থাকা ৩ মাসের ছেলেকে ছুঁড়ে ফেলেন এবং আমাকেও মারপিঠ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি ওই পুলিশ সদস্যের বিচার চাই।
[৮] এ ব্যাপারে এএসআই সাইদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপকালে তিনি জানান, কাইয়ুম মোল্লা চুরি-মামলার আসামী। সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাকে ধরতে পোশাক ছাড়াই সেখানে দ্রুত গিয়েছিলাম। এখন আমি অসুস্থ আছি, কথা বলতে পারবো না।
[৯] এদিকে এলাকাসূত্রে প্রাপ্ত ভিডিও-ক্লিপ ও ছবিতে পুলিশ সদস্যদেরকে সাদা পোশাকে দেখা গেলেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, চুরিসহ কয়েকটি মামলার আসামী কাইয়ুমকে ধরতে পুলিশ পোশাক পরিহিত অবস্থায়ই গিয়েছিল।
[১০] আসামী ধরার সময় তার বাড়ির লোকজন বাধা দেয় এবং এএসআই সাইদুলের হাত কামড়ে দিয়ে আসামী পালিয়ে যায়। কিন্তু এজন্য ওই বাড়ির কাউকে মারপিট করা হয়েছে বা কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, এমনটা আমার জানা নেই।