সুজন কৈরী : [২] সংসার ভালো লাগছিল না বলে স্ত্রীকে রেখে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন রাজধানীর মিরপুর এলাকার একজন বাসিন্দা আফজাল হোসেন (কল্পিত নাম)। স্বামী ঘর ছেড়ে দেওয়ায় সংসার নিয়ে বিপাকে পড়েন স্ত্রী।
[৩] সম্ভাব্য সকল স্থানে স্বামীর খোঁজ করে না পেয়ে অসহায় স্ত্রী শরণাপন্ন হন পুলিশের। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ আফজালকে আশুলিয়া থেকে উদ্ধার করে স্ত্রীর হাতে তুলে দেয়। স্বামীকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা স্ত্রী।
[৪] শনিবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বলেন, আফজাল পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরি করেছেন নামী একটি ব্যাংকেও। ভালো না লাগায় একে একে সব চাকরি ছেড়ে দেন। এক পর্যায়ে সংসার ও পরিবারও ভালো লাগছিল না। তাই সংসার ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।
[৫] এর আগে স্ত্রীর কাছ থেকে কেনাকাটার কথা বলে কিছু টাকা নেন। সঙ্গে ছিল তার জমানো আরও কিছু টাকা। এরপর পালিয়ে আশুলিয়া গিয়ে অবস্থান করেন তিনি।
[৬] স্ত্রী বসে থাকলেন স্বামীর ফেরার আশায়। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। সন্ধ্যা হয় ভোর। মাঝে বিনিদ্র রাত কাটে তার। কিন্তু স্বামী ফেরেন না। হন্যে হয়ে এখানে সেখানে খোঁজ করতে লাগলেন। স্বামী অপহৃত হয়েছেন ভেবে থানায় গিয়ে অপহরনের অভিযোগ দায়ের করেন।
[৭] অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তৎপর হলো তার স্বামীকে খুঁজতে। আফজালের মোবাইল ফোন শুরু থেকেই বন্ধ। কালেভদ্রে মোবাইলটা খোলা পাওয়া যায়। প্রাসঙ্গিক আরও কিছু তথ্যসূত্র ধরে ছুটলো পুলিশ। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান দেখায় তার। সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে গিয়ে পাওয়া গেলো না তাকে। তবে হাল না ছেড়ে চেষ্টা করে একদিন তাকে খুঁঁজে পেলো পুলিশ।
[৮] এআইজি সোহেল রানা বলেন, সংসার ছেড়ে বেরিয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় একটি বাসা ভাড়া করেন আফজাল। সেখানেই বাজারে মাছের ব্যবসা শুরু করেন। মাছ বিক্রি করে একাকী সংসারের খরচ যোগাচ্ছিলেন। পাশাপাশি একটি রিকশাও কিনেছেন। সেখান থেকেও কিছু আয় হয় তার। তা দিয়েই চলছিল একজনের সংসার।
[৯] পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, এ কাজ করা তার ঠিক হয়নি। এমন কাজ আর ভবিষ্যতে করবেন না। অন্যদিকে স্বামীকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা স্ত্রীও।
[১০] জানা গেছে, ডিএমপির মিরপুর থানা পুলিশ ও মিরপুর বিভাগের দক্ষতায় অপহরন মামলার জট খুলে। বেরিয়ে আসে সংসার বিবাগী এক ব্যক্তির অপহরন নাটকের একটি অদ্ভুত গল্প।