সুজন কৈরী : দেশে অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার মূলহোতা ও অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমনসহ ১২ জন আটক করেছে র্যাব। সোমবার ভোরে রাজধানীর বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আবুল বাশার রুবেল, আরমান পিয়াস, রায়হান আলম সিদ্দিকি, জোবায়ের, মেহেদী হাসান রাহাত, মেহেদী হাসান, রাকিবুল হাসান, রাকিবুল ইসলাম, সোলাইমান ইসলাম, জাকারিয়া, আরাফাত হোসেন। তাদের কাছ থেকে ২৯টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, তিনটি ল্যাপটপ, ১৫টি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাবলেট ফোন ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সুমন বিট কয়েনের মাধ্যমে গড়েছেন ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
র্যাব জানায়, রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার বেসিক বিজ মার্কেটিং নাম প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র্যাব-১ একটি দল। সেখান থেকে দেশে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার মূলহোতা ও অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সুমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করেন। ২০১৩ সালে ছোট একটি দোকানে বাচ্চাদের খেলনা ও কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকেই তিনি শুরু করেন বিট কয়েনের ব্যবসা। গড়ে তোলেন বেসিক বিজ মাকেটিং নামক অনলাইন আউট সোর্সিং প্রতিষ্ঠান। আর এর আড়ালে অবৈধ বিট কয়েন ও অনলাইন বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছিলেন।
এই ব্যবসার স্বত্বাধিকারী ও মূলহোতা সুমনের শুরুতে একটি ছোট অফিস থাকলেও তা ধ্যেির ধীরে বড় হয়। বাড্ডায় তিনটি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি তিনটি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ভার্চুয়াল ওয়ালেটের মাধ্যমে অবৈধ ও প্রতারণামূলক ব্যবসা বিট কয়েনের মাধ্যমে সুমন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার ঢাকায় রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপের ব্যবসা।
র্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার আল মঈন জানান, সুমনের রয়েছে একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট। যেখানে বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্জিত লাখেরও বেশি ডলার মজুদ রয়েছে। গত এক বছরে তিনি বিটকয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২ থেকে ১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছেন।
ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতেও জড়িত সুমন জানিয়েছে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার সুমন বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ই-মার্কেটিং সাইটে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিতেন। পরে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতেন। কেউ যদি তার পণ্য ক্রয় করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন তা তিনি হ্যাক করতেন ও টাকা আত্মসাৎ করতেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাংলাদেশে বিটকয়েন নিষিদ্ধ। তবে বেশ কিছু দেশে বৈধ। সম্প্রতি ভারতে এটা বৈধ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরেও বৈধ। এসব দেশের সঙ্গে লেনদেন রয়েছে বা দেশীয় বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক জুয়ারিদের কাছে বিটকয়েন লেনদেন ও বিক্রি করতেন সুমন।
আপনার মতামত লিখুন :