শিরোনাম
◈ ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা ◈ জামায়াতের সঙ্গে জোট করার কারণ জানাল এনসিপি (ভিডিও) ◈ নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন মাহফুজ আলম ◈ দেশে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড ঢল: ডিসেম্বরের প্রথম ২৭ দিনে এলো ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা ◈ জানুয়ারিতে চালু হবে ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট  ◈ হাদির খুনিদের দুই সাহায্যকারীকে আটকের দাবি নাকচ করল মেঘালয় পুলিশ ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে,আগামী ১০ দিনের মধ্যে চার্জশিট : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে ৮ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি ◈ তাহেরির মাহফিল বন্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন, জানা গেল কারণ ◈ সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ০১:০০ দুপুর
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাজ শেষের আগেই ভেঙে পড়ল ঘর

ডেস্ক রিপোর্ট: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য সেমিপাকা বসতঘর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এলজিইডি তত্ত্বাবধানে ওই বসতঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই এ অবস্থা হয় বলে স্থানীয়রা মনে করছে।

অন্যদিকে বগুড়ার নন্দীগ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের বাড়িগুলোয় ফাটল দেখা দিয়েছে। উদ্বোধনের বছর না ঘুরতেই বাড়িগুলোয় ফাটল দেখা দেওয়ায় আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ি পাওয়া পরিবারগুলোর চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে দুশ্চিন্তার রেখা।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান আর্থসামাজিক উন্নয়নের মোহনগঞ্জ উপজেলায় পাঁচটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরের নির্মাণব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপজেলার ২ নম্বর বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের বসন্তিয়া গ্রামের জুয়েল রবিদাসকে (৩০) একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ঘর নির্মাণে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। যথারীতি ঘরের নির্মাণকাজও শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে তিন দিন আগে রবিবার ঘরটি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে যায়।

অন্যদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলায় নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের ইউসুবপুর ও হাটলাল গ্রামে ১০টি সেমিপাকা (আধা পাকা) বাড়ি নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর এসব ঘর ভূমিহীনদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হয় গত বছরের আগস্টে। বাড়িগুলো পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয় ক্ষদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারগুলো। তবে বছর না পেরোতেই ফাটল দেখা দিয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ির দেয়াল, মেঝে ও বারান্দার পিলারে। ফলে এসব বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ইউসুবপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বাড়ির দেয়াল, মেঝে ও বারান্দার পিলারে ফাটল ধরেছে। বারান্দার পিলার ভেঙে পড়ার উপক্রম।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া উজ্জ্বল উরাও, দিনেশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘উদ্বোধনের পরই বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। এর কারণ বাড়ি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে এসব ফাটল ধরা বাড়িতে থাকতে ভয় লাগছে। আমরা দরিদ্র মানুষ বলেই বাড়ি পেয়েছিলাম। কিন্তু এমন বাড়ি পেলাম যে ঘরে থাকা এখন ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ক্ষিতিশ চন্দ্র দাস বলেন, বাড়ি নির্মাণে সিমেন্ট কম দেওয়া হয়েছে এবং ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের বালু। যার কারণে বাড়ির দেয়াল, মেঝে ও পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন বাড়িতে থাকতে ভয় করে। তার পরও নিজ খরচে ফাটল বন্ধ করেছি।

এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী বাড়িগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এমনটি হওয়ার কথা নয়। তার পরও কোনো বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়, তা মেরামত করে দেওয়া হবে। নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের বাড়ির দেয়াল ও মেঝে ফাটলের বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সরেজমিন গতকাল বুধবার দুপুরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শনে গেলে বাসিন্দা জুয়েল রবিদাস জানান, ঘরটি আপনা-আপনি ভেঙে গেছে। তার স্ত্রী দিপালী রবিদাস বলেন, ‘আমাদের দেখানো জায়গায় ঘর নির্মাণ করা হয়নি।’ জুয়েল-দিপালী দম্পতি এখন হতাশ।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজনীন সুলতানা ঘর ধসে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘরে ফাটল দেখা দেওয়ায় আমরাই ভেঙে ফেলি। এ দম্পতির জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।’ তবে উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন মাটি কাঁচা থাকায় ঘর ধসে যাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, যার জমি আছে, ঘরে নেই এমন গরিব-অসহায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ঘর ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি সরেজমিন পরিদর্শন করি এবং নতুন করে ওই দম্পতির ঘর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়