ডেস্ক নিউজ: ব্রিটেনে বিয়েবিচ্ছেদের এক মামলায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। স্বামীকে নয়, আদালত ছেলেকে নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি যেন তার মাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেন।
কারণ ওই ছেলে তার মায়ের কাছে নিজের সম্পত্তির হিসেব লুকিয়েছিলেন। বিচারকের কথায় ‘ছেলে অসৎ, তিনি বাবাকে সাহায্য করার জন্য সবকিছু করতে পারেন।’
সংবাদ প্রতিদিন জানিয়েছে, ফারখাদ আখমেদভের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী তাতিয়ানা আখমেদভা যে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেছিলেন, তার রায় ঘোষণা করে বলা হয়েছিল, খোরপোশ বাবদ স্ত্রীকে ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (৬২৭ মিলিয়ন ডলার) দিতে হবে ব্যবসায়ীকে। কিন্তু বিলিয়নেয়ার বাবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছেলে তেমুর আখমেদভ নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যাতে তার মা খোরপোশের পুরো টাকা না পান। পরে বিচারক গোয়েনেথ নোলস ঘোষণা করেছেন, মাকে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ দিতে হবে তেমুরকে।
তবে তেমুর জানান, কলেজে পড়াকালীন একদিনের ব্যবসায় তিনি ৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি লোকসান করেন। তার দাবি, বাবার আয়ের তথ্য তিনি মায়ের কাছে লুকাননি। বরং নিজের দোষেই সেই টাকা খুইয়েছেন। কিন্তু বিচারক তেমুরের কথা বিশ্বাস করেননি। বিচারক বলেছেন, ‘বাবার অতীত ব্যবহার থেকে ভালই শিক্ষা পেয়েছেন তেমুর। বৈবাহিক সম্পত্তি থেকে যাতে মা একটা পয়সাও না পান, তা নিশ্চিত করতে যা করা আর বলা সম্ভব; সব করেছেন তেমুর।’
২০১২ সালের নভেম্বর মাসে রাশিয়ান তেল সংস্থায় নিজের স্বত্ব বেচে ১.৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিলেন আজারবাইজানে জন্ম নেওয়া ফারখাদ। কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদের জন্য তাতিয়ানাকে কোনও টাকা দিতে রাজি হননি তিনি। টাকা চেয়ে অন্তত আধাডজন দেশে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন তাতিয়ানা। লন্ডনের অভিজাত হাইড পার্কের অ্যাপার্টমেন্ট, একটি বিলাসবহুল ৩৭৭ ফুট ইয়ট এবং ১৪০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের মডার্ন আর্টের মালিকানাও দাবি করেন তাতিয়ানা।
অন্যদিকে ছেলে তেমুরের বিরুদ্ধে রায় প্রকাশের পর ফারখাদ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লন্ডন আদালতের এই রায় অন্যায়। বাবার তথাকথিত পাপের দায় তারা নির্দোষ এবং বিশ্বস্ত ছেলে ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এই বিয়েবিচ্ছেদের রায় ঘোষণা করেছিলেন আদালত। যার পর সাবেক স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়ার দায়িত্ব এড়াতে রাশিয়ায় চলে যান ফারখাদ। কিন্তু ব্রিটেনের নাগরিক তেমুরের বিরুদ্ধে লন্ডন আদালত যেহেতু রায় দিয়েছেন, এবার তাতিয়ানার পক্ষে টাকা আদায় করা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে তেমুর বলেছিলেন, তাতিয়ানা যে টাকা আদায় করতে নিজের ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তা ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’। সূত্র: সমকাল অনলাইন, নিউজ ১৮
আপনার মতামত লিখুন :