স্বপন দেব : [২] মৌলভীবাজারের রাজনগরের উত্তরভাগ চা-বাগানে বালু তোলা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় বাগান ম্যানেজারসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। পরে উত্তেজিত চা-শ্রমিকরা ২ টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।
[৩] ঘটনার খবর পেয়ে সহকারী কমশিনার (ভূমি) ঊর্মি রায় ও রাজনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও বাগানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ চা-বাগানের বড়দল এলাকায় শুক্রবার(২৩ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে।
[৪] পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরভাগ ইউনিয়নের উত্তরভাগ চা বাগানের মধ্যে অবস্থিত কালামুহা ছড়া থেকে অবৈধভাবে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে প্রায়ই ছোটখাটো সংঘর্ষ ঘটে।
[৫] শুক্রবার বড়দল গ্রামের আমীর আলীর ছেলে শাহ মূয়েব আহমদ ও শাহ কয়েছ আহমদের লোকজন গ্রামের পূর্ব দিকে কালামুহা ছড়া থেকে বালু তুলছিলেন অভিযোগ করে বাগানের ম্যানেজার লোকমান চৌধুরী বালু উত্তোলনে বাধা দেন এবং উত্তোলনকারীদের কোদাল নিয়ে আসেন।
[৬] এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। বিষয়টি বাগানের শ্রমিকরা দেখে বাগানের পাগলা ঘন্টা বাজায়। এতে বাগানের উত্তেজিত শত শত শ্রমিক একত্রিত হয়ে অবৈধ হামলা চালায়। এসময় শাহ শুয়েব আহমদ ও তার ভাই শাহ কয়েছ আহমদের দুটি মোটরসাইকেল (সিলেট-হ-১১-১৪৮১ ও সিলেট এ ১১-২২০৪) পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত শ্রমিকরা। এছাড়াও শুয়েব আহমদের দখলে থাকা জমির বেড়া উপড়ে জালিয়ে দেয়া হয়।
[৭] এঘটনায় উভয়পক্ষে আহতরা হলেন- বাগান ম্যানেজার লোকমান চৌধুরী (৫৩), সাইদুর রহমান (৩৯), শিমুল সরকার (৩২), সৈয়দ আসাদুজ্জামান (৪৫), নিয়াজ বখত (৪৫), শাহ শুয়েব আহমদ (৪২) ও শাহ কয়েছ আহমদ (৩৯)।
[৮] শাহ শুয়েব আহমদ বলেন, এখানে বালু তোলার কোন বিষয় নয়। আমাদের জমি বাগার কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক দখল করতে এ ঘটনা ঘটায়। জমি নিয়ে কয়েকবার সভা হয়েছে, আদালতের স্থিতাবস্থা দেয়া আছে। বাগান কর্তৃপক্ষ কাগজ দেখাতে পারেনি। এখন তারা হামলা চালিয়ে আমাদেরকে মারধর ও আমাদের দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।
[৯] উত্তরভাগ চা বাগানের ম্যানেজার লোকমান চৌধুরী বলেন, বাগানের কার্যালয়ের পাশে বাগানের কালামোহা ছড়া থেকে শাহ শুয়েব আহমদ ও তার ভাই অবৈধভাবে বালু তুলছিলেন। এসময় আমি বাধা দেই এবং বালু তুলার কাজে ব্যবহৃত কোদাল নিয়ে আসছিলাম। এসময় শুয়েব আহমদ ও তার ভাই আমি ও আমার সহকারী ম্যানেজারদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমরা আহত হই। বিষয়টি শ্রমিকার দেখে বাগানের পাগলা ঘন্টা বাজালে উত্তেজিত শ্রমিকরা এসে তাদের দুটি মোটরসাইকেল জালিয়ে দেয়।
[১০] রাজনগর থানার উপ পরিদর্শক বিনয় ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দুটি মোটরসাইকেল পুড়ানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
[১১] উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঊর্মি রায় বলেন, বাগান ম্যানেজার বলেছেন বালু তুলতে বাঁধা দেয়ায় তাদের ওপর হামলা হয়েছে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা এসে তাদের রেখে যাওয়া দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :