আরিফুল ইসলাম : জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আলমগীর মিয়া ওরফে উজ্জ্বল-কে গ্রেফতার করেছে সরাইল থানাপুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতে উজ্জ্বলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরাইল থানার এসআই গৌতম চন্দ্র দে।
পরে গ্রেফতারের কারণ সম্পর্কে জানতে রাতে যোগাযোগ করলে সরাইল থানার ওসি আল মামুন মুহাম্মদ নাজমুল আহমেদ বলেন, সম্পত্তি নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক একটি মারামারির ঘটনায় ছোট ভাই আরাফাত মিয়ার দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড় ভাই আলমগীর মিয়া উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, তাদের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিন। গত ১১ এপ্রিল আরাফাতকে মারধর করে বড় ভাই উজ্জ্বল। এ নিয়ে ১৫ এপ্রিল থানায় এসে আরাফাত তার বড় ভাই উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন এ খবর পেয়ে উজ্জ্বল ফের তার ছোট ভাই আরাফাতকে বেধড়ক মারধর করে। এতে আরাফাতের মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়। চোখে আঘাত লাগে। আরাফাত দ্বিতীয় দফা অভিযোগ দায়ের করেন বড় ভাই উজ্জ্বল, ভাবী সুমি বেগম ও ভাতিজা ইলহাম মিয়ার বিরুদ্ধে।
এদিকে আরাফাত মিয়া তার বড় ভাই আলমগীর মিয়া উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে বলেন, আমাদের বাবা তাজুল ইসলাম মারা যাবার পর সমস্ত সম্পত্তি দুই ভাই ও মায়ের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়। কিন্তু বড় ভাই উজ্জ্বল আমার ভাগের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ভোগ করতে চান। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এই পরিচয়ে আমাকে নানাভাবে চাপে ফেলে সম্পত্তি একাই ভোগ করার পায়তারা করছেন বড় ভাই উজ্জ্বল। তাছাড়া তার ছেলে বড় হয়েছে; আমার সন্তানেরা ছোট।
উজ্জ্বল মিয়ার শ্বশুরবাড়ি সরাইল সদরের একটি শক্তিশালী গ্রামে; এসব বাহাদুরি দেখিয়েও বড় ভাই উজ্জ্বল আমাকে চাপে ফেলে নানা হয়রানি করছেন। আমি মাদকাসক্ত এমন অপপ্রচার চালিয়েও বড় ভাই উজ্জ্বল আমার ভাগের সম্পত্তি কৌশলে ভোগ করতে চান। আমাকে কয়েকবার মারধর করেছে তারা। সেদিন আমি থানায় কেন অভিযোগ করলাম; সেই অপরাধে ফের আমাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বড় ভাই ও তার স্ত্রী এবং তার ছেলে। আমার চোখে আঘাত করেছে উজ্জ্বল মিয়ার ছেলে। সে আমার ভাতিজা; কোলেপিঠে নিয়েছি বহুবার। সম্পত্তির লোভে এই ভাতিজাও আমাকে আঘাত করেছে।
আরাফাত আরও বলেন, বড় ভাই উজ্জ্বল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা, থানাপুলিশ নাকি তার পকেটে থাকে সবসময়ই; এমন দম্ভোক্তি মুলক কথাবার্তা বলেই সেদিন আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করেছেন বড় ভাই উজ্জ্বল ও তার পরিবারের লোকেরা। আমি কেন থানায় অভিযোগ করলাম, এটাই ছিল আমার অপরাধ। মাথায় রক্ত নিয়ে বহু সমাজপতির কাছে গিয়েছিলাম; কেউ আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে যেতে চান না। অবশেষে নিরুপায় হয়ে পুনরায় পুলিশের আশ্রয় নিয়েছি; এখন পুলিশ-ই আমার শেষ ভরসা। আমি ন্যায় বিচার চাই।