লিহান লিমা: [২] ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে টিকা দেয়ার ওপরও করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলেন, টিকা এই প্রাণঘাতী ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ঠেকায় না, কিন্তু এটি আক্রান্ত রোগীর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি কমানোসহ মৃত্যুহার কমায়। কেবলমাত্র মাস্কই এই ভাইরাস নাক-মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ আটকাতে সক্ষম। হিন্দুস্তান টাইমস
[৩] হায়দ্রাবাদের ডাক্তার লক্ষ্মী লাবণ্য আলাপাটি বলেন, ‘দুই ডোজ টিকা দেয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডিগুলো উন্নত হয় ও এটি সংক্রমণের জটিলতা এবং মৃত্যুহার হ্রাস করে। টিকা গ্রহণের পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ৮৫ভাগ কমে। কিন্তু টিকা ভাইরাসকে শরীরে প্রবেশ করা ঠেকাতে পারে না, কেবলমাত্র মাস্কই এটি করতে সক্ষম।’
[৪] দিল্লী সরকারী হাসপাতালের এক জ্যেষ্ঠ ডাক্তার বলেন, ‘টিকা করোনার বিরুদ্ধে পূর্ণ নিরাপত্তা সুরক্ষা দেয় ন। মাস্ক না পরলে টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তির নাক ও মুখের মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। ফলে অনেকেই টিকা গ্রহণের পর মাস্ক না পরায় আক্রান্ত হয়েছেন। মনে রাখতে হবে আমাদের সবচেয়ে বড় টিকা হচ্ছে ‘মাস্ক।’
[৫] ভারতের পাটনা, দিল্লী, চেন্নাইসহ কয়েকটি শহরে গত কয়েক মাসে টিকা গ্রহণের পরও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দিল্লীর শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালের ৩৭জন ডাক্তার সম্প্রতি করোনা আক্রন্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে ৫জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যাদের প্রায় বেশিরভাগই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার দুই ডোজ টিকাই গ্রহণ করেছেন।
[৬] দিল্লীতে ৫৪ বছরের একজন পরিষ্কার কর্মী গত ২২ ফেব্রুয়ারি করোনায় স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগে মারা যান। তার ছেলে ধীরাজ বলেন, ‘আমার বাবা ১৭ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন। বাসায় আসার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন, তার তাপমাত্রা বেড়ে যায়, দু-তিনদিন পরই তিনি মারা যান। চেন্নাইতে গত ১৫ মার্চ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী এক ব্যক্তি ২৯ মার্চ করোনা শনাক্ত হন ও ৩০ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৪ এপ্রিল মারা যান।
[৭] ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট ডাক্তার আবধীশ বানসাল বলেন, ‘আমরা টিকা গ্রহণের পরও সংক্রমণের ঘটনা দেখেছি, এমনকি দুই ডোজ নেয়ার পরও এটি হয়েছে। কিন্তু টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে করোনায় অসুস্থ হয়ে পড়ার হার কম। টিকা আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়াসহ মৃত্যুহার হ্রাস করে। সেই সঙ্গে দুই ডোজ গ্রহণের পরই টিকার সম্পূর্ণ কার্যকারীতা পাওয়া যায়।’
আপনার মতামত লিখুন :