কামাল হোসেন: [২] সোনালী (২১) ভাগ্য দোষে ১৫ বছর বয়সে পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে বাবার বাড়ি ঝিনাইদহ থেকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে ঠাঁয় হয় তার। যৌনপল্লীর গতি-প্রকৃতি বোঝার আগেই ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে মিন্টু নামের এক যুবকের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক হয় তার।
[৩] সম্পর্কের সূত্র ধরেই গত বছরের জুন মাসে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মন্ডলের পাড়ার মমিন ফকিরের ছেলে মিন্টু ফকিরের (২৮) সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৬ বছরের সঞ্চতি প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকা ও সকল সম্পদ সরল বিশ্বাসে তুলে দেয় স্বামীর হাতে। সেই টাকায় গড়ে তোলে বাড়িঘর ও অন্যান্য সম্পদ।
[৪] ভালোই চলছিল তাদের সংসার জীবন কিন্তু বিধিবাম কিছুদিন যেতে না যেতেই নানা অজুহাতে অত্যাচার করে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল স্বামী-শ্বাশুড়ি। সব অত্যাচার নিরবে সইলেও সম্প্রতি ঠুনকো অভিযোগে মিন্টু তাকে গোপনে এক তরফা ভাবে তালাক দিয়ে ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়। গত ৭ দিন ধরে অসহায় গৃহবধূ দ্বারে দ্বারে ঘুরছে বিচারের আশায়।
[৫] সরেজমিন আলাপকালে অসহায় গৃহবধূ জানান, মিন্টু আমাকে বিয়ে করে বাড়ীতে নিয়ে যাবার কথা বলে টানা ৫ বছর আমার কাছ থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। আমিও সরল বিশ্বাসে একটা সংসার পাবার আশায় তার জন্য সবকিছু করি। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় অন্তত ২৫ লক্ষাধিক টাকা ধাপে ধাপে তার হাতে তুলে দেই।
[৬] সে আমার টাকায় তাদের নিচু খাল ভরাট করে এবং সেখানে পাকা করে ঘর তুলে। এরপর সে আমাকে পতিতালয় থেকে গ্রামে নিয়ে এসে সমাজের মাতবরদের উপস্থিতিতে বিয়ে করে। ভালোই চলছিল আমাদের সংসার কিন্তু মাঝে মধ্যে বিভিন্ন অজুহাতে আমার উপর অত্যাচার করে আমার স্বামী-শ্বাশুড়ি এভাবে প্রায় দেড় বছর সংসার করার পর আমি গর্ভবতী হই। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের বাড়ীতে যাই, সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত বাচ্চা প্রসব করি।
[৭] সে সময় তার কোন খোঁজ খবর নেয়নি মিন্টু ও তার পরিবার। এক মাস মায়ের বাড়ী থাকার পর সে গত ২ এপ্রিল তার স্বামীর কাছে চলে আসে। বাড়ীতে আসার পর মিন্টু দুইদিন তার সাথে থাকার পর বলে আমি তোমাকে তালাক দিয়েছি এই বাড়ীতে তুমি আর থাকতে পারবে না এই বলে আমাকে ঘর থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়।
[৮] প্রতিবেশীরা জানায়, মিন্টু দর্জির কাজ করে সংসার চালায় কিছুদিন আগেই টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় তার বাবা মারা যায় এরপর মেয়েটিকে বিয়ে করে আনার পর মেয়েটির টাকায় সে বাড়ি করেছে বেকু কিনেছে। এখন তারা মেয়েটিকে রাখতে চাচ্ছে না। এটা চরম অন্যায়।
[৯] এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, এ বিষয়ে ওই গৃহবধূ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার স্বাভাবিক জীবন-যাপন তথা সংসার রক্ষার জন্য তদন্তপূর্বক আইনগত সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করবো। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :