রুশদ ফরীদী: ঢাকা উত্তরের প্রাক্তন মেয়র আনিসুল হক ২০১৭ সালের নভেম্বরের আকস্মিকভাবে মারা যান। মৃত্যুর আগে আনিসুল হকের একটা বড় পরিকল্পনা ছিলো ঢাকা শহরের বাস সার্ভিসকে ঢেলে সাজানোর। ঢাকা শহরে প্রায় আট নয় হাজার বাস চলে খুবই বিশৃঙ্খলভাবে। বেশিরভাগ মালিকের নাকি একটা দুইটা করে বাস। যে যার মতো যেদিকে খুশি বাস চালায়। এই বন্য বাস সার্ভিসকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য ছয়টি কোম্পানির মধ্যে সব বাস ভাগ করে, ছয়টা বেসিক রুটে ভাগ করে দেওয়া কথা ছিলো। এর ফলে বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা কমে আসতো, যেখানে খুশি যখন তখন বাস থামানো, উল্টা পাল্টা চালিয়ে এক্সিডেন্ট করে মানুষ মারা থেমে যেতো। এর জন্য প্রায় ৩০০০ কোটি টাকার বাজেটের একটি তহবিল বরাদ্দ করার কথা ছিলো। কিন্তু আনিসুল হকের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এই প্রজেক্টের অপমৃত্যু ঘটে।
এর পরে ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পরেও আবার এই প্রজেক্ট নিয়ে কথা ওঠে। তখন প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ১৭-১৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু হেলমেট বাহিনী দিয়ে নিপীড়ন নির্যাতনের মাধ্যমে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনার পর এসব ফালতু বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর আর প্রয়োজন মনে করে না কেউ। তখন বাস সার্ভিসকে নিয়ন্ত্রণে আনা হলে আজ হয়তো এই ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়ে ১০০ ভাগ ভোগান্তিতে ঢাকাবাসীকে ফেলে দেওয়া দরকার হতো না। তাই সব মিলিয়ে ঢাকা শহর রয়েই যায় চরম দুঃশাসনের যোগ্যতম রাজধানী হিসেবে, বিশ্বে যার অবস্থান পৃথিবীর যুদ্ধ বিধ্বস্ত শহর সিরিয়ার দামেস্কের চেয়ে সামান্য একটু উপরে। ফেসবুক থেকে