শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ২৬ মার্চ, ২০২১, ০৫:১৫ সকাল
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২১, ০৫:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: ১৯৫৩ সালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখনকার কাউন্সিলটি দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। প্রথমত দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন, দ্বিতীয়ত ১৯৫৪ সালের নির্বাচন। প্রথম সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক জেল থেকে বের হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তাই একজন নিয়মিত সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজন ছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মুসলিম লীগকে পরাজিত করার জন্য সমস্ত বিরোধী দল এক হয়ে কাজ করবে- কাউন্সিলে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিলো। শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করতে সক্ষম হয়। তিনি যদি সাধারণ সম্পাদক না হতেন, তাহলে নির্বাচনে তিনি এতো অবদান রাখতে পারতেন না। সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে তিনি দক্ষ সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। তখনকার সময় ওয়াহিদুজ্জামানের থেকে তরুণ ও তুলানামূলকভাবে কম ধনী হয়েও তাকে পরাজিত করে শেখ মুজিব জয় লাভ করেন। তখনকার সময় তিনি সমস্ত পূর্ববাংলা ঘুরে ঘুরে দলকে সংগঠিত করে নির্বাচনে জয়ী করেন। এ জন্য তার অবদান ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।

বর্তমানে যেমন ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্বীকার করা হয় ঠিক তেমনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের জয়লাভের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকার করা হবে। ১৯৬১ সালে আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হই। তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও শহীদুল হক মুন্সী আমাকে মনি ভাইয়ের কাছে নিয়ে যান। আমি তার পা ছুয়ে ছালাম করি। মনি ভাই তখন রাজনৈতিক আলোচনা না করে আমার ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তাদের বললেন, ওকে মামার কাছে নিয়ে যাও। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর কাছে। বঙ্গবন্ধুর কাছে যাওয়ার পর আমি তার পা ছুঁয়ে সালাম করলাম। বঙ্গবন্ধু আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমার বাড়ি ও পড়ালেখা কোথায় করি। আমার বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়ার কারণে মনি ভাই আমাকে খুব আদর করতেন। বঙ্গবন্ধুও আমাকে ভালোবাসতেন।

প্রায় ১১ বছর তার কাছাকাছি থাকার সুযোগ হয়েছিলো। অর্থাৎ ছাত্রলীগ করার কারণে তার সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হতো এবং তিনি দেখলেই আমাকে আদর করতেন। আমার বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়ার কারণে তিনি আমাকে বেশি আদর করতেন। বঙ্গবন্ধু সবসময় গাড়ির সামনের সিটে বসতেন। আমি একবার দরজা খুলে গাড়ির সামনের সিটে বসলাম, তখন তিনি ধমক দিলেন। তখন থেকে সবাই বুঝলেন, বঙ্গবন্ধু গাড়ির সামনের সিটে বসতে পছন্দ করেন। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু আমাদের ডাক্তার সাহেব বলতেন। বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক বিষয়ে আমার সঙ্গে আলাপ করলেও তিনি কোনোদিন আমাকে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার কথা বলেননি। তিনি সবসময় বলতেন, ভালোভাবে লেখাপড়া করো। তোমাকে ডাক্তার হতে হবে। লেখাপড়া শেষে ডাক্তারদের বিদেশে যাওয়া বন্ধ থাকলেও বঙ্গবন্ধু আমাকে বিশেষ ক্ষমতায় বিদেশে পাঠান। বঙ্গবন্ধুর অনুমতি নিয়ে আমি নিজ খরচে বিদেশে যাই। বিদেশে যাওয়ার পরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে কোনো যোগাযোগ রাখিনি। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এফআরসিএস পাস করতে হবে। আমি মধ্যম মানের ছাত্র ও সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছিলাম। যদি কেউ সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে পড়াশোনা করতে পারে তাহলেই সফল হতে পারবে।

বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্রকারীরা হত্যা করে ১৯৭৫ সালে এবং আমি পাস করে বের হই ৭৮-এ। বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমি ডাক্তার হয়েছি এবং এফআরসিএস পাস করতে পেরেছিলাম। ১৯৬৯ সালের গণঅভুত্থানের পটভূমি তৈরি করেছিলাম আমরা এবং সেখানে আমার সামান্য অবদান ছিলো। আমি ১৯৬৭ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। তখন এনএসএফ ছিলো আমাদের প্রধান বিরোধী। এনএসএফ-এর সঙ্গে লড়াই করা ছিলো ছাত্রলীগের কাজ। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, ছাত্রলীগের অনেক নেতা রয়েছেন, যারা বামদের থেকে অনেক বেশি শিক্ষিত ও লেখাপড়া জানে।

আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। বিএনপির রাজত্বকালেও বঙ্গবন্ধুর ছবি আমি অফিস কক্ষে রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় নিয়মিত আমি বঙ্গবন্ধুর বাসায় যেতাম। তখন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করি। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মান্য করে চলি এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাই করবো। বর্তমানে খুব ভালোভাবে দেশ চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার একটি রোড ম্যাপ আছে। তিনি অবশ্যই সফল হবেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার সফলতা নিয়ে সামান্যতম সন্দেহ কারও নেই। যতো বড় বিপদই আসুক না কেন, সে বিপদ মোকাবেলা তিনি করতে পারবেন। তার ওপর আল্লাহর রহমত আছে। সকল বিপদেই আল্লাহ বঙ্গবন্ধুকন্যাকে রক্ষা করেছেন। একমাত্র ষড়যন্ত্রকারীরাই তার সফলতায় বিশ্বাস করে না। পরিচিতি : প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা। অনুলিখন : শাহিন হাওলাদার

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়