রাশিদ রিয়াজ : গত বছর মার্কিন শীর্ষ কোটিপতি এলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি কোম্পানি টেসলা’র শেয়ারমূল্য বেড়েছিল ৭শ শতাংশ। কিন্তু সর্বশেষ গত লেনদেনে টেসলার শেয়ার মূল্য ব্যাপক দর পতন হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে এলন মাস্ককে। মাস্কের সম্পদের পরিমান ১৫৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু টেসলার শেয়ার পতনে তার সম্পদ হ্রাস পেয়েছে ১৫ শতাংশ। বিশে^র দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী হিসেবে এলন মাস্কের সম্পদ এখন শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোসের সম্পদের চেয়ে ২০ বিলিয়ন ডলার কম। সম্পদ হ্রাস-বৃদ্ধির লড়াইয়ে তাদের মধ্যে মাসখানেক সময়ে এ ব্যবধান ঘটল। অথচ গত জানুয়ারি মাসে টেসলার শেয়ার মূল্য সর্বোচ্চ থাকলেও দরপতনে তা হ্রাস পেয়েছে প্রায় এক তৃতীয়াংশ। আরটি
গত শুক্রবার এসএন্ডপি ৫০০ সূচক লেনদেনে শেয়ারমূল্য ৩.৮ শতাংশ হ্রাস পায়। এরপর দরপতন বৃদ্ধি পায় ১৫.৩ শতাংশে। বাজার বিশ্লেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই টেসলার শেয়ারমূল্য স্ফীতিকে অতিরিক্ত বা ‘টেক বাবল’ হিসেবে অভিহিত করে আসছিলেন। অতিমূল্যায়িত টেসলার শেয়ারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ছিল ব্যাপক। গত শনিবার মাস্ক আশ^াস দিয়ে বলেন টেসলা দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহকদের গাড়ি সরবরাহ দিতে সক্ষম হবে। এর আগে কম্পিউটার চিপ তৈরি করতে না পারায় গাড়ি উৎপাদনে সংকটে পড়ে টেসলা। টেসলার যে গাড়ি উৎপাদন পরিকল্পনা ছিল তাতে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে কোম্পানিনি। গত বছর ৫ লাখ গাড়ি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয় মার্কিন কোম্পানিটি। যাদের অধিকাংশই ক্রেতা চীনা নাগরিক। গত বছর শেষ প্রান্তিকে টেসলা রেকর্ড পরিমান গাড়ি অর্থাৎ ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৭০টি গাড়ি সরবরাহ করতে সমর্থ হয়। একদিকে যখন টেসলার গাড়ি সরবরাহ বাড়ছে তখন গাড়ি পিছু গড় বিক্রয় মূল্য ১১ শতাংশ কমছে। টেসলার মডেল থ্রি ও মডেল ওয়াই গাড়িটি ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়।
গত বছর এলন মাস্ক ও জেফ বেজোসের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২১৭ বিলিয়ন ডলার। বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয় এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে ২ হাজার ডলার করে প্রণোদন দেওয়া সম্ভব। অনলাইনের চাহিদা বাড়ায় গত বছরে ই কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সম্পদ ব্যাপক বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে কোভিড মহামারীতে মানুষের লকডাউনে থাকা এবং ঘরে ঘরে তাদের চাহিদা মত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারা। অন্যদিকে, প্রথমে বিক্রি কমে গেলেও বছরের শেষের দিকে এসে টেসলার বিক্রি বেড়ে যায় ব্যাপক। টেসলার ৭৫ শতাংশ শেয়ার এখন মাস্কের হাতে।
এর আগে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় নাম আসার এক সপ্তাহের মধ্যে সেরা কার্বন শোষণ প্রযুক্তির জন্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন এলন মাস্ক। অন্যান্য ব্যবসার মতো মাস্ক কার্বন শোষণ প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বৈশ্বিক পরিবেশগত সমস্যা প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ওপর জোর দেন। মাস্ক তার উপার্জিত সম্পদ তার মূল আগ্রহের প্রকল্পগুলোতে খরচ করতে চান। বিশেষ করে, মহাকাশ গবেষণায়। কিন্তু তার মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স’এর অভিযানে দুইবার বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। এরপরও মাস্ক বলেছেন, মঙ্গল গ্রহে একটি শহর গড়ে তুলতে অনেক রিসোর্সের প্রয়োজন। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব এ কাজে সহায়তা করব। ৪৯ বছর বয়সী বিশ্বের এই শীর্ষ ধনী ব্যক্তি তার মাস্ক ফাউন্ডেশনে ২৫৭ মিলিয়ন ডলার দান করেছেন। যা তার সম্পদের শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।