সমীরণ রায়, শরিফ শাওন: [২] তাসনুভা আনান শিশির বলেন, বৈশাখী টিভি আমাকে সুযোগ দেওয়ায় আমাদের কমিউনিটির জন্য বিরাট ইতিবাচক দিক। ৫০ বছরের বাংলাদেশে একটা মাইল ফলক। এই পরিবর্তনটা বৈশাখীর দেখা দেখি হাজারটা প্রতিষ্ঠান এই কমিউনিটির জন্য এই উদ্যাগটা কাজ করবে।
[৩] তিনি বলেন, কোনোদিন চাইনি জেন্ডার পরিবর্তন করবো। সাধারণ মানুষের জন্যই পরিবর্তনটা করতে হয়েছে। নতুন একটা জীবন খুঁজতে হয়েছে। আমাকে হ্যারেজমেন্ট, সেক্সুয়ালি ইনসাল্ট ও এ্যাসাল্ট করা হতো। ভেতরে একটা নারী সত্যাকে মনে করছিলাম। তবে কোন হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছি, সেটি বলবো না।
[৪] তিনি আরও বলেন, সংবাদ পাঠিকা হওয়ার জন্য কোনো কোর্স করিনি। ২০০৭ সাল থেকে থিয়েটার করতাম। নাটকের দল বটতলার সঙ্গে কাজ করছি। শুদ্ধ উচ্চারণের জন্যও কোনো কোর্স করিনি। থিয়েটারই আমাকে তৈরি করেছে। কখনও আবৃত্তি ও গান করিনি। তবে নাচ করতাম। আপাতত লেখা-পড়া করতে চাই। আমি শিল্পী মানুষ। সারাজীবন পারফমেন্স করতে চাই।
[৫] তাসনুভা আনান শিশির বলেন, ঢাকায় আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে একা থাকি। যদিও বাসা ভাড়া নিতে আগে সমস্যা হতো। এখনও আর হয় না। বাবা-মা বাড়ি থাকেন। গ্রামে যাচ্ছি না। কারণ গ্রামের মানুষ কিভাবে দেখবে। কারণ আমার বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। সেকারণে এই রিক্স নিতে চাই না। চাইনা কোনো সাংবাদিক বাড়ি গিয়ে বাবা-মায়ের ইন্টারভিউ নিক। বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আলাদা। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের যুদ্ধা আলাদা।
[৬] তিনি বলেন, একজন এক্টিভিস্ট হিসেবে বলছি, সেখানে জেন্ডার শব্দটা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটার বাংলা শব্দটা কি হতে পারে, তার জন্য গবেষকরা রয়েছেন। তবে রূপান্তর শব্দটা ব্যবহার করা যেতে পারে।
[৭] তিনি বলেন, বাবা সামসুল হক, মা জামিরুন বেগম। চার বোন দুই ভাই ছিলাম। এখন আমরা ৫ বোন ১ ভাই। খুলনার বাগেরহাটে ১৯৯১ সালের ১৬ জুন তার জন্ম। তিনি নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে সমাজকর্ম বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন। পাশাপাশি ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে পাবলিক হেলথ বিষয়ে আরও একবছরের জন্য মাস্টার্স করছেন। অনার্সে ফাস্ট ক্লাস। মার্স্টার্সে সেকেন্ড ক্লাস।
[৮] তিনি আরও বলেন, কেউ একা থাকতে চায় না। মানুষ তার সঙ্গি চায়। ভালো বাসতে চায়। ভালোবাসার মানুষ চায়। কিন্তু আগে খাওয়াটা যোগার করতে হচ্ছে। থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগে সামাজে বিয়ে ও পরিবার গঠনের অধিকার হোক। রাষ্ট্র অধিকার বোধটা দিক। তারপরে কারো সঙ্গে জড়াবো। পরিপূর্ণ ট্রানজেন্ডার বিল হওয়া উচিত । সম্পত্তিতে ভাগ বন্টনের নিশ্চয়তাটা জরুরি। ট্রানজেন্ডার মানুষগুলোর মৃত্যুর পরে সমাধিটা কিভাবে হবে সেটি ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ।