আল হেলাল: [২] ভাটি বাংলার মরমী ভূবনের একজন কালজয়ী মরমী কবি বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন)। যিনি ১৯০১ ইং সনের ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ এবং ১৯৮৫ ইং সনের ৬ মে মৃত্যু হয়। প্রয়াত এই সঙ্গীত সাধকের রচিত “দ্বীন দুনিয়ার মালিক খোদা এত কষ্ট সয়না তোমার দ্বীলকি দয়া হয়না” গানটি ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করেছে।
[৩] ভাটিয়ালি গানের শিল্পী আব্দুল আলিম, বাউল কামাল পাশা রচিত “প্রেমের মরা জলে ডুবেনা/ওপ্রেম করতে দু’দিন ভাঙ্গতে একদিন এমন প্রেম আর কইরোনাগো দরদী” সহ একাধিক গান গেয়ে সুনাম অর্জন করেছেন। এছাড়া মুজিব বাইয়া যাওরে তোমার ৬ দফারী নাও”সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শানে প্রায় ৫০টি সমকালীন গান রয়েছে প্রয়াত এই লোককবির। তিনি প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেছেন।
[৪] একুশে পদকে ভূষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম ও পন্ডিত রামকানাই দাশের অগ্রজ এই লোকশিল্পীকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ৮ বার প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছে। এমনকি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে ৩ বার। মোট ১১ বার প্রস্তাব প্রেরিত হলেও কপালপুড়া কামাল উদ্দিন এর ভাগ্যে জুটছেনা মরণোত্তর স্বীকৃতি।
[৫] প্রবীণ বাউলশিল্পী সাহেব উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জের পঞ্চরত্ন বাউলের মধ্যমণি হচ্ছেন আমার ওস্তাদ মরহুম বাউল কামাল পাশা। যিনি ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দিরাই থানার রাজানগর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাতৃভাষার দাবীতে ও ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সংগীত রচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মূল্যায়ন করলে মরমী সংস্কৃতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক কাজ হবে।
[৬] ২০২০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত ডাঃ এমইউ কবীর চৌধুরী বলেন, আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পূরস্কারে ভূষিত করার জন্য প্রস্তাব আবেদন করেছি। আশা করছি দেশের হারিয়ে যাওয়া মরমী সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে মুজিববর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শানে সর্বপ্রথম সংগীত রচয়িতা বাউল কামাল পাশাকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতি দেবেন। সম্পাদনা: হ্যাপি