স্নেহাশীষ রায়: এক দল আছে, যাদের ‘আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙ্গানো’গানটি শুনলেই চোখে জল আসে, লোমক‚প শিহরিত হয়। আরেকটি দলের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের মতে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া , বা গান গেয়ে শ্রদ্ধা জানানো, একটি ধর্মবিরোধী কাজ। এবং একুশ এলেই তাদের শরীরে যেন কেউ বিছুটি পাতা ছড়িয়ে দেয়। আকারে ইঙ্গিতে ধর্মের দোহাই দিয়ে, বাঙালি সংস্কৃতির পরিবর্তে একটা ভিন্ন দেশীয় সংস্কৃতি চালু করতে চায়।
প্রথম দলটির বাংলার জন্য কান্নাটি ভীষণ নির্ভেজাল। কে সঠিক কে অসঠিক, সেটি যার যার রাজনৈতিক মতবাদের উপর নির্ভর করে। কিন্তু দ্বিতীয় দলটির যে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি তীব্র ঘৃণা আছে, তাদের ন্যুনতম কোন সন্দেহ নেই।
বাঙালি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ঘৃণাটি নতুন কিছু নয়। মধ্যযুগে কবি আব্দুল হাকিম কম দুঃখে, বঙ্গবাণী কবিতায় বেজম্মা বলে গালি দেননি। যে সব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি। কবি আব্দুল হাকিম যাদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন, তারা সফল না হলেও , চারশ’ বছর ধরে ঘৃণাটি জীবিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। পাকিস্তান আমলের প্রেক্ষাপটে, আমাদের দেশে একুশ এসেছে। এবং তারা জানে একুশকে যদি ধর্মের বটিকা খাইয়ে দুর্বল করে দেয়া যায়, তবেই কেবল মধ্যযুগের ভাবনা চিন্তায় একটা সমাজ গঠন সম্ভব হবে বাংলাদেশে।
এদের মধ্যযুগীয় ভাবনার বিরুদ্ধে, চীনের দেয়ালের মতো দাঁড়িয়ে আছে একুশে ফেব্রুয়ারি। তাই, একুশ এলে তাদের শরীরে কে যেন বিছুটি পাতা ছড়িয়ে দেয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :