শিমুল মাহমুদ: [২] বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. শারমিন ইয়াসমিন বলেছেন, শুধু টিকা-ই নয় যেকোন নতুন কিছু নিয়েই অতিকথন বা গুজব ছড়ানো হয়। টিকার আগে করোনাভাইরাস নিয়েও এগুলো হয়েছে। আর এসবের অনেক কিছুই করা হয় উন্নত দেশগুলো থেকে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির কারণে সহজেই সেগুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
[৩] তিনি বলেন, টিকা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার মানে নিজে অনিরাপদ থাকা এবং সমাজ তথা জাতিকেও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি মধ্যে ফেলে দেয়া।
[৪] সুইডেনের গোথেনবার্গ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর খান সোহেল বলেন, নীতিনির্ধারক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা কতোটা সত্যকে সামনে নিয়ে আসতে পারবেন তার উপর অনেককিছু নির্ভর করছে। টিকা নিয়ে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অন্য কোন সমস্যা হলে তা নিয়ে লুকোচুরি না করে মানুষকে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে হবে, জানাতে হবে।
[৫] তিনি বলেন, ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে টিকা আনার ব্যাপারে অনেকে অনেককিছু বললেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি সহ অনেক সংস্থার টিকার প্রধান উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানই সিরাম। সিরাম শুধু বাংলাদেশ-ই নয়, সারা বিশ্বে টিকা সরবরাহ করছে। সুতরাং সিরাম টিকার বিষয়ে নেতিবাচক হয় এমন কোন ঝুঁকি নেবে না।
[৬] যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডা. খন্দকার মেহেদী বলেন, শুধু বাংলাদেশ-ই নয়, বিশ্বের সব জায়গাতেই টিকা নেয়ার বিষয়ে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের মধ্যে অনীহা রয়েছে। দেশে যারা টিকা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধায় রয়েছেন তাদেরকে সচেতন করে টিকা প্রদান করতে পারলে একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে টিকা দেয়া যাবে, যা হবে সন্তোষজনক। ধর্ম প্রচারকদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে তাদের দেখে এবং তাদের কথা শোনে বহু ভক্ত-অনুরাগী টিকা নিতে উৎসাহ বোধ করবেন।
[৭] তিনি বলেন, শুধু অ্যাপস এর মাধ্যমে করোনার টিকাদানের রেজিস্ট্রেশন সীমাবদ্ধ রাখলে অনেক জটিলতা দেখা দেবে মন্তব্য করে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকা গ্রহণের সুযোগ রাখার আহবান জানান। তাছাড়া সাধারণ মানুষকে টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনে উপহার দেয়ায় ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও তিনি প্রস্তাব করেন।
[৮] শনিবার দিবাগত রাতে (০৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত 'বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকার বাস্তবতা এবং অতিকথন' শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব মতামত ব্যক্ত করেন।