হাসনাত কাইয়ুম : ৫ ফেব্রুয়ারি, গণজাগরণ মঞ্চের সূচনার দিন। আজ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে আটক মুস্তাক এবং কিশোরের কারাবাসের ৯ মাস। রাষ্ট্রের কেন ডিজিটাল আইনের প্রয়োজন হয় তার কিছুটা দেখিয়েছে আল-জাজিরা নামক একটি বিদেশি চ্যানেল, তাদের একটি রিপোর্টে। রাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ে থেকে দেশের সম্পদ পাচার এবং অন্যান্য যে অপকর্ম এরা করে চলেছে, তা যাতে মানুষের সামনে প্রমাণসহ কেউ তুলে ধরতে না পারে মূলত তার জন্যই এইসব অন্যায্য আইনগুলি বানাতে হয়, হয়েছে।
কিন্তু কোনো অপকর্মই তো সম্পূর্ণ আড়ালে রাখা যায় না বরং দেশে কথা বলার সুযোগ থাকলে, প্রচারের সুযোগ থাকলে বিদেশিদের এইসব অপকর্ম নিয়ে সময়ে-অসময়ে রসালো আলাপ আর নিজস্বার্থে চাপ দেয়ার জন্য যেনতেনভাবে তা ব্যবহার করার সুযোগ থাকতো না। কিন্তু সর্বাত্মক ধ্বংসের কালে, মেরুদণ্ডহীন পা-চাটাদের এসব বিবেচনা থাকে না, থাকে না বলেই রাষ্ট্রের সবচেয়ে সেন্সেটিভ একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য আর্ন্তজাতিক পরিসরে দেশের স্বার্থ ঝুঁকিতে ফেলার মতো অবিবেচক আত্মঘাতী বিবৃতি দেওয়ানো সম্ভব হয়। সম্ভব হয় জাতিসংঘকে জড়িয়ে এমন মিথ্যাচার করানো যার মুখোমুখি প্রতিবাদ করতে জাতিসংঘ পর্যন্ত বাধ্য হয়। পুরো পরিস্থিতি গভীরতর সংকটের ঈঙ্গিত দিচ্ছে । রাষ্ট্র এবং সরকারের সকল প্রতিষ্টানের শীর্ষপর্যায়ে যে সব দুর্নীতিপরায়ণ অযোগ্য স্তাবকদের বসানো হয়েছে তাদের প্রতি মানুষের ঘৃণা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে কিন্তু এই ঘৃণা প্রকাশের এবং এইসব ঘৃণ্য লোকদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে রক্ষা করার সকল শান্তিপূর্ণ পথকে কঠিনভাবে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থাকে ভয়াবহ দুর্যোগের পূর্বাভাস বলেই মনে হয় । কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী, জনগণের সচেতন উদ্যোগ এবং অংশগ্রহন ছাড়া অন্যকোনো পথে যদি কোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনও হয়, তা কখনোই মানুষের স্বার্থ রক্ষা করেনি, করে না, করবে না। এই ভয়াবহ সংকটের কলে জনগণের স্বার্থে ভ‚মিকা পালনে আগ্রহী সকল রাজনৈতিক শক্তির ন্যুনতম শর্তে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। আমরা সকলের সক্রিয় তৎপরতা আশা করছি। ফেসবুক থেকে