ডেস্ক রিপোর্ট: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদকে জানিয়েছেন, দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান; এই হিসাব গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী খেলাপি ঋণসম্পর্কিত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ঋণ আদায়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা সংসদে তুলে ধরেন। জাতীয় পার্টির (জাপা) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অর্জন ৩২.৮৭ শতাংশ।
সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের টিকা কেনার জন্য এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি দলের আরেক সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশ থেকে অবমূল্যায়ন (আন্ডার ইনভয়েসিং) বা অতিমূল্যায়নের (ওভার ইনভয়েসিং) মাধ্যমে অর্থ পাচারের কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তা খতিয়ে দেখছে। যেসব ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, সেসব ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। অর্থপাচার বন্ধে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা বা অর্থপাচার অনেকাংশে কমবে।
চার মোবাইল অপারেটরের কাছে পাওনা ১৩ হাজার ২২ কোটি ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৪ টাকা
সরকারি দলের এমপি শহীদুজ্জমান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সংসদকে জানান, দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের কাছে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন) ১৩ হাজার ২২ কোটি ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৪ টাকা পাওনা রয়েছে। অপারেটরগুলো হলো—গ্রামীণ ফোন, রবি, সিটিসেল (বর্তমানে বন্ধ) এবং রাষ্ট্রয়াত্ত টেলিটক। এদের মধ্যে গ্রামীণ ফোন ও রবির কাছে বকেয়া অডিট আপত্তি সংক্রান্ত। আর সিটিসেলের বকেয়া উচ্চ আদালত নির্ধারিত এবং টেলিটকের কাছে পাওনা রয়েছে থ্রিজি তরঙ্গ বরাদ্দের টাকা।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ ফোনের অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৮ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৯ টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। তাদের কাছে বকেয়া রয়েছে ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা। রবি ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকার মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা দিয়েছে। বকেয়া আছে ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা। সিটিসেলের কাছে বাকেয়া ১২৮ কোটি ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের কাছে বকেয়া ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। মন্ত্রী জানান, টাকা আদায় নিয়ে টেলিটক বাদে তিনটি অপরাটরের সঙ্গে মামলা চলমান আছে। অন্যদিকে টেলিটকের টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।-ইত্তেফাক