দীপক চৌধুরী: শুধু ১৫ আগস্টের ভয়াবহ নৃশংসতা আর আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়েই শত-সহস্র বাস্তবধর্মী ছবি তৈরি করা সম্ভব। সিনেমার মধ্যে যদি বাস্তবতা থাকে, প্রেমিকার জন্য প্রেমিকের দায়বদ্ধতা থাকে, পিতা-মাতা-সন্তানের জন্য যদি ভালবাসার আকুলতা-মিশ্রিতকাহিনি থাকে তবে তো ছবি প্রাণবন্ত হবেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দর্শকদের হলে ফেরানোর মতো চলচ্চিত্র বানাতে হবে।’ হাঁ, এটাই সত্য। জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশে সংস্কৃতির অঙ্গন কিছু ‘পরগাছার’ নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বঙ্গবন্ধুর নাম মোছার এক নজিরবিহীন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল এই চলচ্চিত্র অঙ্গনে। কারণ, এটা অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও সহযোগিতায় নেওয়া সেই পরিকল্পনা প্রণয়ণকারীরা এখন বঙ্গন্ধুকন্যার শাসনামলে নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে অবাক হই। এ কী, কি দেখছি। এদের বিষয়ে, এই সুবিধাবাদের ব্যাপারে শেখ হাসিনাকে কেন জানানো হয়নি? বিস্মিত হই। সুতরাং এখনই এক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ববানদের সামনের সারিতে এগিয়ে আসতে হবে। আজ এটা পরিষ্কার যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুভিত্তিক সিনেমাগুলোই পারে চলচ্চিত্রের মতো শক্তিশালী মাধ্যমে নিজেদের শক্তিধর খুঁটি হাতে দাঁড়াতে। বাংলাদেশটাকে সমৃদ্ধ করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। তাঁর হাতেই গড়া বিএফডিসি।
গতকাল রোববার (১৭ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চলচ্চিত্র বাংলাদেশে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। সবার যেন কল্যাণ হয় সেই লক্ষ নিয়েই চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যান ট্রাস্ট নীতিমালা করা হয়েছে। এক হাজার কোটি টাকার ফান্ড তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে বন্ধ সিনেমাহলগুলো চালু ও আধুনিকায়ন করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের এই শিল্প নষ্ট হয়ে যাক তা আমরা চাই না। সিনেমাগুলো সেভাবেই তৈরি করতে হবে যেন পরিবার নিয়ে দেখা যায়। শিশুদের জন্যও সিনেমা তৈরি করতে হবে যেন তারা সিনেমা দেখে শিক্ষা নিয়ে জীবনকে প্রস্তুত করতে পারে।’
তাই বলবো, আজ আমাদের একমাত্র দায়িত্ব হবে, চলচ্চিত্র অঙ্গনের খলনায়কদের চিহ্নিত করা। এদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা দাপটের সঙ্গে বিএফডিসিকে কুক্ষিগত করেছে- ওরা এখনো এই সেক্টরে দাপট দেখায় কীভাবে?
লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :