ডেস্ক রিপোর্ট : আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহ. যখন রাক্কা শহরে যেতেন তখন এক যুবক তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করত। কখনো মাসআলা জিজ্ঞেস করত। কখনো অন্য কথা জিজ্ঞেস করত। একবার যখন ইবনুল মুবারক রাক্কা শহরে গেলেন, তখন ওই যুবকের দেখা পেলেন না এবং সে এসে সাক্ষাতও করল না। তিনি লোকদের কাছে ওই যুবক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকে যে দেখছি না, সে কোথায় গেল?
লোকেরা বলল, তার বহু টাকা ঋণ ছিল। ঋণদাতা তাকে গ্রেফতার করে জেলখানায় দিয়েছে। এ সংবাদ শুনে তার মনে বড়ই দুঃখ হলো। তিনি লোকদের বললেন, তার কত টাকা ঋণ হয়েছিল? লোকেরা বলল, দশ হাজার দিনার। তারপর জানলেন ঋণদাতা কে? লোকেরা বলল, অমুক ব্যক্তির কাছে ঋণী ছিল। তখন তিনি ওই ব্যক্তির সন্ধানে বের হলেন। ঠিকানা জিজ্ঞেস করতে করতে তার ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। তার কাছে গিয়ে বললেন, আমার এক বন্ধু আছে। তোমার কাছে সে ঋণী, এ কারণে সে জেলখানায় আছে। আমি এ ঋণ তোমাকে পরিশোধ করে দিচ্ছি; কিন্তু একটা শর্ত আছে, তা হল, তুমি ওয়াদা করো এবং কসম খাও যে, আমার জীবদ্দশায় তাকে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কিছু বলবে না। সে কসম খেল আমি বলব না। তাই তিনি দশ হাজার দিনার তাকে দিয়ে বললেন, এখন তাকে ছেড়ে দাও। সুতরাং সে জেলখানায় গিয়ে তাকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসল।
যখন সে যুবক জেল থেকে ছাড়া পেয়ে শহরে এল, এখন সে জানতে পারল যে, কয়েকদিন আগে হজরত আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক এখানে এসেছিলেন। লোকের কাছে জিজ্ঞেস করল যে, এখান থেকে তিনি কখন চলে গেছেন? লোকেরা বলল, এইমাত্র কয়দিন আগে বের হয়েছেন। ফলে যুবকটি তার পেছনে অনুসরণ করল এবং পথে গিয়ে তাকে পেয়ে গেল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক বললেন, আমি শুনেছিলাম যে, তুমি জেলখানায় আছ? সে উত্তর দিল, হঁ্যা, আমি জেলেই ছিলাম। এখন আল্লাহ তাআলা মুক্তি দান করেছেন। তিনি বললেন, কীভাবে বেরুলে? তখন যুবকটি বলল, আল্লাহ তাআলা গায়েবি ফেরেশতা পাঠিয়ে দিলেন। সেই আমার ঋণ পরিশোধ করে দিল। এজন্য আমি রেহাই পেয়েছি। আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক বললেন, এখন আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করো আর আমিও তোমার জন্য দোয়া করতে ছিলাম যে, আল্লাহ তোমাকে মুক্তি দান করুন।
ওই যুবক ইবনুল মুবারকের মৃত্যুর পর ঘটনা জেনে বলল, গোটা যিন্দেগী আমার খবর হলো না যে, আমার ঋণ পরিশোধকারী আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহ.। কেননা ওই ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মুবারকের সামনে কসম করেছিল, আমি আপনার জীবদ্দশায় এ বিষয়ে কাউকে বলব না; কিন্তু যখন আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারকের ইন্তেকাল হয়ে গেল, তখন ওই ব্যক্তি আমাকে বলল যে, তোমার ঋণ মুক্তির কারণ বাস্তবে আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহ. ছিলেন। (তারিখে বাগদাদ ১০ম খণ্ড, পৃ. ১৫৯)।
...
প্রকাশিতব্য খুতুবাত হতে