মহসীন কবির: কেবলই সামনে এগিয়ে যাওয়া, পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। এই নিয়ম দেখতে দেখতে কালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরোও একটি বছর। দিনপঞ্জিকার শেষ পাতাটিও শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্মৃতির খেরোখাতা থেকে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব মুছে শুরু হবে নতুন বছর। কোভিডকালীন ২০২০ সালে আমার হারিয়েছি অনেক গুণী মানুষদের। যাদের স্থান কখনোই পূরণ হবার নয়।
জানুয়ারি
সাবেক এমপি ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী: বছরের শুরুতে ২ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী। নবম ও দশম সংসদে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন : ১০ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন। ১৯৯১ সালে বাগেরহাট-১ আসন থেকে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী: ১৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম।
এমপি আবদুল মান্নান: ১৮ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক: ২১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন যশোর-৬ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। ইসমাত আরা সাদেকের স্বামী এ এস এইচ কে সাদেক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ছিলেন।
সাবেক এমপি ওয়াজি উদ্দিন খান: ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজি উদ্দিন খান।
ফেব্রুয়ারি
সাংবাদিক মিথুন মাহফুজ: ১ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও দৈনিক আমাদের সময়ের সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুর রহমান মিথুন।
সাংবাদিক ইসহাক কাজল: ১০ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন বরেণ্য সাংবাদিক, বাংলা একাডেমী প্রবাসী পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক কাজল।
সাবেক মন্ত্রী মো. রহমত আলী : ১৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী। গাজীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।
মার্চ
সুরকার সেলিম আশরাফ: ২ মার্চ মৃত্যুবরণ করেছেন জনপ্রিয় গানের সুরকার সেলিম আশরাফ। দেশাত্মবোধক গান 'যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা'সহ অনেক জনপ্রিয় গানের সুর দিয়েছিলেন সেলিম আশারাফ।
সাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী : ১৯ মার্চ মৃত্যুবরণ করেছেন সাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী। ১৯২৭ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলে জন্ম নেওয়া ড. আশরাফ সিদ্দিকী ছিলেন একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক, লোক ঐতিহ্য গবেষক, এবং শিশু সাহিত্যিক।
শিক্ষাবিদ ড. বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর: ২৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করেছেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ, শিল্প-সাহিত্য সমালোচক, কবি ও কথাসাহিত্যিক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। তিনি ১৯৩৬ সালের ৯ জানুয়ারি ও চাঁদপুরের কচুয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০০৯ সালে একুশে পদক পেয়েছেন।
প্রখ্যাত নির্মাতা মতিউর রহমান পানু: ২৫ মার্চ মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকাই সিনেমার প্রখ্যাত নির্মাতা মতিউর রহমান পানু।
সহকারী পরিচালক হিসেবে ১৯৬৪ সালে প্রথম কাজ শুরু করেন পানু।
এপ্রিল
সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ: ২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। ২০০১, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৪-২০১৯ মেয়াদে ভূমিমন্ত্রী ছিলেন।
সাবেক সচিব ড. সা’দত হুসাইন : ২২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেছেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন। সা’দত হুসাইন ১৯৪৬ সালের ২৪ নভেম্বর নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগদান করেন।
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী: ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেছেন জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ।
জামিলুর রেজা চৌধুরী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বঙ্গবন্ধু সেতুর ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান ছিলেন। এছাড়া চলমান পদ্মা সেতুর আন্তর্জাতিক পরামরর্শক প্যানেলেরও নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদক সম্মাননা লাভ করেন। একুশে পদক পাওয়া গুণী এ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে ২০১৮ সালে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকন: ২৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকন। হুমায়ুন কবীর খোকন সংবাদ মাধ্যম ‘সময়ের আলো’র প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি ‘আমাদের নতুন সময়’ এর প্রধান প্রতিবেদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দৈনিক আমাদের সময়ে উপসম্পাদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মে
এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা: ৬ মে মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকার ডেমরা-দনিয়া-মাতুয়াইল আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা-৫ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন হাবিবুর রহমান মোল্লা।
অভিনেতা রানা হামিদ: ৯ মে মৃত্যুবরণ করেছেন ঢালিউডের আলোচিত ব্যবসা সফল ছবি ‘গ্যাং লিডার’ এর অভিনেতা রানা হামিদ। নব্বই দশকে একাধিক ছবিতে কাজ করে পরিচিতি পাওয়া এ অভিনেতা বর্তমানে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
লেখক, অনুবাদক সাজ্জাদ কবীর: ১২ মে মৃত্যুবরণ করেছেন রম্য পত্রিকা ‘উন্মাদ’-এর নির্বাহী সম্পাদক, লেখক, অনুবাদক সাজ্জাদ কবীর। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ আয়োজিত গল্প প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়ে লেখক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান: ৯ মে মৃত্যুবরণ করেছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক ছিলেন। এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষা সংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের অনুবাদক ও দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ ছিলেন।
সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান: ১৬ মে মৃত্যুবরণ করেছেন বরেণ্য সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান। ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’, ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই’, ‘মনেরও রঙে রাঙাব’, ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’, ‘এক বুক জ্বালা নিয়ে বন্ধু তুমি’সহ বহু গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আজাদ রহমান। কোনোটির সুরকার তিনি, কোনোটির সংগীত পরিচালক।
অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর: ১৬ মে মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকার সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর। তিনি অ্যাপেক্স গ্রæপের চেয়ারম্যান ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী। নিলুফার মঞ্জুর ১৯৭৪ সালে ইংরেজি মাধ্যমের ওই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
সাবেক এমপি এম এ মতিন:২৬ মে মৃত্যুবরণ করেছেন চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের চারবারের সাবেক এমপি ও বিএনপির কন্দ্রী নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ মতিন।
জুন
সাংবাদিক সুমন মাহমুদ: ৪ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাংবাদিক সুমন মাহমুদ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
মেয়র বদর উদ্দিন কামরান: ১৪ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবার সিলেট পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে হন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান। ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর কামরান মেয়র মনোনীত হন।
সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম: ১৩ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে নাসিম সংসদে ষষ্ঠবারের মতো সিরাজগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। এবার মন্ত্রিত্ব না পেলেও দলের সভাপতিমÐলীতে থাকার পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন নাসিম। খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ: ১৪ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ। শেখ আব্দুল্লাহ ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে ব্যস্ততার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ মে তার নির্বাচনী এলাকার (টুঙ্গীপাড়া-কোটালীপাড়া) উন্নয়নে প্রতিনিধির দায়িত্ব দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহকে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী: ২০ জুন মৃত্যুবরণ করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী। তাঁর পুরো নাম কিন্তু আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার খান সনতলা গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কামাল লোহানী স্বাধীন বাংলা বেতারের সংবাদ বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন ঢাকা বেতারের।১৯৭৩ সালে ‘ দৈনিক জনপদ’ নামে একটি নতুন পত্রিকায় যোগ দিয়ে আবার ফিরে আসেন সাংবাদিকতায়। ১৯৭৪ সালে ‘বঙ্গবার্তা’, এরপর ‘দৈনিক বাংলার বাণী’ পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৭৭ সালে রাজশাহী থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক বার্তা’র নির্বাহী সম্পাদক হন। ১৯৭৮ সালে তাঁকে সম্পাদক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে তৎকালীন তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হলে ‘দৈনিক বার্তা’ছেড়ে ‘বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট’ এ যোগ দেন। ১৯৯১ সালে তিনি শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ষোলো মাসের মাথায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তিনি পিআইবিতে ফিরে আসেন। ২০০৮ সালে দুই বছরের জন্য আবার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
জুলাই
ট্রান্সকম গ্রæপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান: ১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান। লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের মালিক। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বীমা ইত্যাদি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল হাউজিংয়ের উদ্যোক্তা পরিচালক। লতিফুর রহমান প্যারিসভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য সংগঠন আইসিসির নির্বাহী সদস্য, আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের পরিচালক। এ ছাড়া তিনি কয়েক মেয়াদে এমসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।
সাবেক মন্ত্রী গিয়াস উদ্দিন: ৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এটিএম গিয়াস উদ্দিন।
এন্ড্রু কিশোর: ৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন রাজশাহীতে। এন্ড্রু কিশোর বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বাধিক ১৫ হাজার গান গাওয়া শিল্পী। চলচ্চিত্রে তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় গান আর কারও নেই।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন: ৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। তিনি ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মহিলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন।
সিনিয়র সাংবাদিক রাশীদ উন নবী বাবু: ৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক রাশীদ উন নবী বাবু।
৪৫ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে রাশীদ উন নবী বাবু দৈনিক সকালের খবরের সম্পাদক ছিলেন।
যমুনা গ্রæপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল: ১৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন যমুনা গ্রæপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম দেশের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী ছিলেন।
সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজ: ১৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা শাহজাহান সিরাজ। শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩ বার জাসদের মনোনয়নে এবং ১ বার বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বিজ্ঞানী আলী আসগর: ১৬ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশে উদ্ভাবনমূলক বিজ্ঞানচর্চা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ আলী আসগর। তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক একাধিক বই লিখেছেন । তার লেখা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সময় প্রসঙ্গে’, ‘ভাষা ও বিজ্ঞান’, ‘বিজ্ঞান প্রতিদিন’, ‘বিজ্ঞানের বিচিত্র জগত থেকে’, ‘বিজ্ঞানের মজার প্রজেক্ট’, ‘বিজ্ঞান ও সমাজ’, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের পথে’, ‘পরিবেশ ও বিজ্ঞান’, ‘বিজ্ঞানের দিগন্তে’, ‘বিজ্ঞান আন্দোলন’।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ: ১৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন-ব্যবস্থা, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালে একুশে পদক পান অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
সাবেক মন্ত্রী আবুল কাশেম: ১৮ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের সাব-সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক যুব মন্ত্রী আবুল কাশেম ও বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব, খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও সাবেক হুইপ মো. আশরাফ হোসেন।
সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম: ২৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই- রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। মো. ইসরাফিল আলম নওগাঁ-৬ আসনে দীর্ঘ প্রায় ৩৬ বছর পর ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী মো. আলমগীর কবিরকে পরাজিত করে বিএনপির দুর্গ হিসেবে খ্যাত এই আসনটিতে বিজয়ী হন।
চিত্র পরিচালক টুলু : ২৮ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক আফতাব খান টুলু। আফতাব খান টুলু দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকার মোহম্মদপুরে শেখেরটেকের ১ রোডে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সদস্য ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
আগস্ট
চিত্রনায়ক সাত্তার: ৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন আশির দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সাত্তার। চলচ্চিত্রে সাত্তারের প্রথম উপস্থিতি ১৯৬৮ সালে। লোকজ গল্পের সিনেমায় তিনি দারুণ সাফল্য পেয়েছিলেন।
সাবেক মন্ত্রী আবদুল মান্নান: ৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান। বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।
সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী: ৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন সুরসম্রাট গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী। লোকজ ও ধ্রুপদি গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা আলাউদ্দীন আলীর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে প্রায় চার দশক ধরে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান করে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন।
চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর: ১৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন করোনায় চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। চিত্রশিল্পী, কার্টুনিস্ট ও ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় কর্মী মুর্তজা বশীরের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট। উপমহাদেশের প্রখ্যাত বহুভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র সন্তান তিনি।
প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম: ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বেগম পত্রিকার মাধ্যমে সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
ভাস্কর মৃণাল হক: ২১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন ভাস্কর মৃণাল হক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। বঙ্গবাজারে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন ভাস্কর্যের নির্মাতা তিনি।
সিআর দত্ত: ২৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বও সেক্টরের কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে জন্ম নেয়া সি আর দত্তের পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তার বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা দত্ত। চিত্তরঞ্জন দত্ত ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিছুদিন পর ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে কমিশন পান। ১৯৬৫ সালে সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে লড়েন তিনি। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালংয়ে একটা কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেন তিনি। ১৯৭৯ সালে বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮২ সালে তিনি পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৮৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
সাংবাদিক রাহাত খান: ২৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন কথাশিল্পী ও সাংবাদিক রাহাদ খাঁন। তিনি ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ এর সাবেক সম্পাদক ছিলেন। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পদকসহ দেশে-বিদেশে লেখার জন্য সম্মাননা পেয়েছেন এই কথাসাহিত্যিক।
পিডিপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী: ৩১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেছেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) চেয়ারম্যান ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী। ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) নামে একটি দলের নিবন্ধন পান কোরেশী। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি।
সেপ্টেম্বর
অভিনেতা কে এস ফিরোজ: ৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা কে এস ফিরোজ। ১৯৬৮ সালে প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন কে এস ফিরোজ। প্রথম অভিনীত টিভি নাটকের নাম ‘তবুও দ্বীপ জ্বলে’। অভিনয় জীবনে পাঁচ শতাধিক টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনেতা মহিউদ্দিন বাহার: ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন ছোটপর্দার বর্ষীয়ান অভিনেতা মহিউদ্দিন বাহার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। ইত্যাদিতে সর্বশেষ অভিনয় করেছেন ২০১৮ সালের মার্চ মাসে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্বে)। সেসময়ও তিনি অসুস্থ ছিলেন। অভিনয়ের প্রবল ইচ্ছে থাকায় আমরা এ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নিয়ে আসি। সবাই মিলে কোলে করে তাকে দোতলায় উঠাই। অনেকদিন পর সহশিল্পীদের কাছে পেয়ে সারাদিন তাদের সঙ্গে গল্প করে কাটিয়ে দেন তিনি।
অভিনেতা সাদেক বাচ্চু: ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় খল অভিনেতা এবং মঞ্চ ও টেলিভিশনের পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের গুণী অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। দেশের বাড়ি চাঁদপুরে হলেও জন্ম ঢাকায়। সিনেমার কিংবদন্তি পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ চলচ্চিত্রে তার নাম বদলে সাদেক বাচ্চু রাখা হয়। তখন থেকেই এ নামে পরিচিত তিনি।
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী: ১৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। আল্লামা শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায়। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (পটিয়া জিরি মাদ্রাসা) পড়াশোনা করেন তিনি।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের নওশেরুজ্জামান: ২১ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় একেএম নওশেরুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম: ২৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে জন্ম নেয়া মাহবুবে আলমের ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের রাজনীতি ছেড়ে আইন পেশায় মনোযোগী হন মাহবুবে আলম।
অক্টোবর
লেখক রশীদ হায়দার: ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত লেখক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক রশীদ হায়দার। রশীদ হায়দার গল্প-উপন্যাস-নাটক-অনুবাদ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা সব মিলিয়ে ৭০ এর অধিক বই রচনা করেছেন। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৪), একুশে পদক (২০১৪), হুমায়ুন কাদির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমিতে চাকরি শুরু করেন এবং ১৯৯৯ সালে বাংলা একাডেমির পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেন। পরে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন: ১৭ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন (এফসিএ)। ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। একই বছর ময়মনসিংহ-৫ মুক্তাগাছা আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ভাষাসৈনিক সাবেক এমপি দাদুভাই: ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রবীণ ভাষাসৈনিক এম নুরুল ইসলাম দাদুভাই। এম নুরুল ইসলাম খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি, সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক: ২৪ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। ব্যারিস্টার রফিক উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন তিনি। বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াই করেন তিনি।
নভেম্বর
সম্পাদক আবুল হাসনাত: ১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন ছায়ানটের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট লেখক, কালি ও কলম পত্রিকার সম্পাদক আবুল হাসনাত। আবুল হাসনাত দীর্ঘ ২৪ বছর দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন। তিনি মৃত্যুর আগে সাহিত্য পত্রিকা কালি ও কলমের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সাবেক গভর্নর সেগুফতা বখ্ত চৌধুরী: ১১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সেগুফতা বখ্ত চৌধুরী ।
এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী: ১৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।
সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা: ১৪ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন রাজশাহীর বিএনপি নেতা ও সাবেক সাংসদ সদস্য আবু হেনা। আবু হেনা বিএনপির মনোনীত রাজশাহী-৪ বাগমারা আসন থেকে পর পর দুই বারের সংসদ সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করে রাজস্ব বোর্ড কাস্টমস-এর মহাপরিচালক ও পরে প্রকৃচির মহাসচিব নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে তিনি বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন।
সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী : ১৬ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন নবম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার লোনসিং বাহের দিঘীরপাড় গ্রামে ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন শওকত আলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৫৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান।
অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার সাঈদী: ২১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার আড়াইবাড়ি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ, পীরসাহেব গোলাম সারোয়ার সাঈদী। মাওলানা গোলাম সরোয়ার সাঈদী ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দীন, তিনি সুবক্তা ও ওয়ায়েজ ছিলেন। গত কয়েক বছরে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তার আলোচনা ইউটিউবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কবি হিমেল বরকত: ২২ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কবি হিমেল বরকত। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪২ বছর।
ফুটবলার বাদল রায় : ২২ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুটবলার বাদল রায়। আশির দশকে দর্শক মাতানো তারকা খেলোয়াড় ছিলেন বাদল রায়।
সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান: ২৪ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান। মুনীরুজ্জমান ১৯৭০ সালে সিপিবির মুখপত্র সাপ্তাহিক একতায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে তিনি একজন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন।
সাহিত্যিক হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী : ২৬ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন সাংবাদিক ও শিশু সাহিত্যিক হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী। হুমায়ুন সাদেক দৈনিক আমার দেশ ও অর্থনীতি প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক এবং দৈনিক নয়া দিগন্তের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক ছিলেন। হুমায়ুন সাদেক সাংবাদিকতার পাশাপাশি শিশুদের জন্য ছড়া ও কবিতা লিখতেন। তার উল্লেখ্যযোগ্য কবিতা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘এক কিশোরের মন’, ‘অচেনা মানুষ অজানা কথা’ ও ‘সারপ্রাইজ’। এছাড়া তিনি জাতীয প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের: ২৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন সাংস্কৃতিব ব্যক্তিত্ব ও বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকের।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। ১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের “কবর” নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু করেন আলী জাকের।
ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান: ২৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন প্রখ্যাত সরোদ বাদক ওস্তাদ শাহাদত হোসেন খান। ১৯৫৮ সালে উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে জন্ম নেন শাহাদাত হোসেন খান। তার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায়। তিনি বিশ্বখ্যাত সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খার ছোট ভাই ওস্তাদ আয়েত আলী খার নাতি। তার বাবা ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গসঙ্গীতশিল্পী ও সেতার বাদক ছিলেন। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান। তার যমজ মেয়ে আফসানা খান সেতার বাদক ও রুখসানা খান সরোদ বাদক।
ডিসেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজামান মজুমদার: ২ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজামান মজুমদার (বীর প্রতীক)।
মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন তাকে করা হয়।
সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ: ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ফরিদপুর জেলার বাঙালি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
কবি, লেখক আদিত্য কবির: ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন মারা গেছেন কবি, লেখক ও বিজ্ঞাপন ব্যক্তিত্ব আদিত্য কবির। আদিত্য কবির বিখ্যাত কবি হুমায়ূন কবিরের ছেলে। তিনি বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকে অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
বাম রাজনীতিক আজিজুর রহমান: ১০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা, ইউনাইটেড লীগের সম্পাদকমÐলীর সদস্য আজিজুর রহমান। ১৯৬০ এর দশক থেকে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আজিজুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে গত ৫০ বছরে এদেশের জনগণের শোষণমুক্তির বিপ্লবী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন। সামরিক স্বৈরতন্ত্রবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
হেফাজতের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী: ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় ঐক্যজোটের শরিক দল জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ছিলেন।
চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু: ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন দি রেইন, সারেং বউ, অঙ্গার ও গরীবের বউয়ের মতো দেড় শতাধিক বাংলা ছবির চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু।
মনজুরে মওলা: ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কবি, প্রাবন্ধিক মনজুরে মওলা। মনজুরে মওলা পেশা জীবনে ছিলেন আমলা। আশির দশকের শুরুর দিকে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। তার মেয়াদকালেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা।
বিশিষ্ট নাট্যজন মান্নান হীরা: ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশের পথনাটকের অন্যতম পুরোধা বিশিষ্ট নাট্যজন মান্নান হীরা। মান্নান হীরা ছিলেন একাধারে নির্দেশক, নির্মাতা ও অভিনেতা। আজীবন পথনাটক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এই নাট্যব্যক্তিত্ব পথনাটক পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি আরণ্যক নাট্যদলের সাবেক সভাপতি। বাংলাদেশ নাট্যকার সংঘের প্রথম সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। তার লিখা নাটকগুলির মধ্যে লাল জমিন, ভাগের মানুষ, ময়ূর সিংহাসন ও সাদা-কালো উল্লেখযোগ্য।
পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাসেম: ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হাসেম। এম এ হাসেম ১৯৫৯ সালে তামাকপণ্য কেনাবেচার মাধ্যমে ব্যবসা শুররুকরেন। ১৯৭০ সালের কিছু আগে তিনি চট্টগ্রামে গড়ে তোলেন মেসার্স হাসেম করপোরেশন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিত্যপণ্যের পাশাপাশি সিমেন্ট, ইস্পাত আমদানি শুরু করেন। তার গড়ে তোলা পারটেক্স গ্রুপের জনপ্রিয় পণ্যের মধ্যে রয়েছে ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক্ক, মাম পানি ও আরসি কোলা। এম এ হাসেম ২০০১ সালে বিএনপির টিকিটে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ আসন থেকে জয় লাভ করেন। তবে তিনি সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপির রজনীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন: ২৪ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন আশির দশকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের ৯৬ মেয়াদের সরকারের সময় তিনি বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই।
অভিনেতা আবদুল কাদের : ২৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের । ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার সোনারং গ্রামে অভিনেতা আবদুল কাদেরের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর তিনি সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে জুতা তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে; সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর। তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘ মেরাজ ফকিরের মা’। টিভিতে তিনি তিন হাজারের মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী তিনি।