মাহবুব মোর্শেদ : ১৯৮৬ সালে আমার বয়স ছিলো নয় বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। আমাকে গ্রামের স্কুল থেকে মফস্বলের একটা স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে। আমাদের গ্রাম ছিলো একেবারে গভীরে। পুরো গ্রামে টেলিভিশন ছিলো একটা বাড়িতে।
আমরা শুক্রবার নামাজের আগে নাটক দেখতে যেতাম সেখানে। রেডিও-ও খুব হাতে গোনা ছিলো। স্বাভাবিকভাবে ছিয়াশির বিশ্বকাপ দেখার কথা নয়। তবে খবর পেতাম। আমাদের সমবয়সী একজন বিশ্বকাপ দেখবে বলে তার নানার বাড়ি চলে গিয়েছিল। তার কাছে আমি প্রথম ম্যারাডোনার নাম শুনি।
যেদিন আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করলো সেদিন মফস্বলের স্কুলে গিয়ে আমি বোকা বনে গেলাম। সেখানে অনেক বাসাতেই টেলিভিশন। স্কুলের সবার মধ্যে তীব্র উচ্ছ্বাস। স্কুলের সবাই গোল হয়ে উচ্চস্বরে আলোচনা করছে। আমার ক্লাসমেটরাও তাতে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু আমি সে আলোচনার কিছুই বুঝতে পারছি না, আলোচনায় অংশ নেওয়া তো দূরের কথা। সব আলোচনা ছিলো ম্যারাডোনাকে নিয়ে।
আমার ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল। খুব অসহায় বোধ করছিলাম। পরে আমার আব্বা আমাকে রহস্য পত্রিকার একটা সংখ্যা কিনে দিয়েছিলেন। সংখ্যাটা ম্যারাডোনাকে নিয়ে। ওই সংখ্যাটা পড়ে আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওর কী নিয়ে আলোচনা করছিল।