শিরোনাম
◈ রাতে বাংলামোটরে জুলাই পদযাত্রার গাড়িতে ককটেল হামলা (ভিডিও) ◈ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক মোকাবেলায় বাংলাদেশের চার দফা কৌশল ◈ বিআরটিএর মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা ◈ সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ হার‌লো ৭৭ রা‌নে ◈ ২০ বছরেও অধরা এমআই-৬'র ভেতরের রুশ গুপ্তচর! (ভিডিও) ◈ নারী ফুটবলের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য গর্বের: প্রধান উপদেষ্টা ◈ প্রবাসীদের জন্য স্বস্তি: নতুন ব্যাগেজ রুলে মোবাইল ও স্বর্ণ আনার সুবিধা বাড়লো ◈ একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি ◈ 'মধ্যপ্রাচ্যে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ১০:২৯ দুপুর
আপডেট : ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ১০:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাসান সাদ ইফতি : আমি জানি না

হাসান সাদ ইফতি : আমাকে যারা কাছ থেকে চেনে তারা বলে দিতে পারবে যে, আমি খুব সহজেই “আমি জানি না” বলে থাকি। জ্ঞানের গভীরতা বা বুদ্ধিমত্তা প্রমাণ করার আমার কোন প্রয়োজনই নেই। জ্ঞান জগতের বিশালতার কাছে আমার জানার এবং বুঝার পরিধি অতি নগন্য।

আমাদের চারপাশের বেশিরভাগ মানুষের মাঝে “জানি না” বলতে পারার ক্ষেত্রে একটি জড়তা দেখা যায়। যেকোন বিষয়ে কেবল স্নাতক পাশ করেই সেই বিষয়ে শতভাগ জ্ঞান রাখার একটি ভাব নিয়ে থাকে তারা। ভুল ধরিয়ে দিলে উল্টো বলে দিবে তাদের কোথাকার কোন ডিগ্রী আছে বা কত বছর ধরে কোন পেশায় নিয়োজিত আছে। নিজের দাম্ভিকতার অন্ধকারে নিজেকেই যেন গ্রাস করে ফেলছে।

সত্যি বলতে, দোষটা কোন একক ব্যক্তির নয়, দোষটা আমাদের সমাজের। ছোটবেলা থেকেই আমাদের “পড়া ধরা” হয়। না পারলে কোন না কোন শাস্তি বা অপমানের ব্যবস্থা থাকে। ফলে কোন কিছু না জানলে সেটা লুকিয়ে রাখার একটি প্রবণতা অনেক ছোটদের মাঝেও দেখা যায়। সব প্রশ্নেরই একটি উত্তর আছে, আবার সব উত্তরেরই একটি প্রশ্ন আছে – এমন ধারণা নিয়ে বড় হই আমরা। অথচ, বেশিরভাগ প্রশ্নেরই কোন উত্তর নেই। আর চারপাশে দেখতে পাওয়া অনেক ঘটনার ব্যাখ্যা দেবার জন্য যে প্রশ্নগুলো করা প্রয়োজন, সেই প্রশ্নগুলো খোঁজা সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি। অথচ প্রশ্ন করার, জানতে চাওয়ার এই ইচ্ছেকে খর্ব করা হয় আমাদের বাল্যকালেই।

আমি যখন গবেষণার জন্য আমেরিকা যাই, আমার প্রফেসর প্রথম দিনই আমাকে বলে, “এই ল্যাবের প্রথম নিয়ম হল ‘আমি জানিনা’ বলতে পারা। যে বিষয়গুলো আমরা জানি, তা নিয়ে আলোচনা করা কেবল সময়ের অপচয়। বরং কী জানো না, তা দিয়ে শুরু করা যাক। যখন দেখবে আমরাও প্রশ্নটির উত্তর জানি না, বই আর গবেষণাপত্র দেখবে। এর পরেও যদি উত্তরটি খুঁজে না পাও, হয়ত তোমার প্রশ্নটি নতুন একটি প্রশ্ন, যা হতে পারে আমাদের গবেষণার বিষয়।” সেদিন থেকে আমি নিজেকে বার বার জিজ্ঞাসা করি, কী পারি আর পারিনা, কোনটা বুঝি আর কোনটা বুঝিনা।

জানার সত্যিই কোন শেষ নেই। ১২ বছর স্কুলে গিয়ে যেমন মানুষ শিক্ষিত হয়, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৪ বছর পড়ে মানুষ কোন বিষয়ে আরও কিছু জানতে পারে। তবে এতে জানার শেষ হয় না। এমন আরও ১৬টি বছর জানার প্রক্রিয়া চলমান রাখলে মোট ৩২ বছরের জানার পরিধি অর্জিত হবে। একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই পরিধির কোন সীমা নেই, কাজেই বড়াই করারও কোন অবকাশ নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ে যে গণিত পড়ানো হয়, তা প্রায় ২০০ বছর আগে অয়লার, গাউস, নিউটন আর লাইবনিটসের মত মানুষের করা কাজ। অহংকার শুধু তাঁদেরই মানায়।

যে জ্ঞানটি মানব জাতির কোন না কোন বইয়ে কাগজস্থ হয়ে আছে, তা জানার মাঝে গর্ব করার কিছুই নেই। আর যা গোটা মানব সমাজের কাছে অজানা, তা না জানার মাঝে কোন লজ্জা নেই।

আমি জানি না।

হাসান সাদ ইফতি
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়