রাজু চৌধুরী:[২] বিবেক যখন আবেগকে হার মানায় তখন সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় সততা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা। দেশ ও দশের কল্যাণে বিগড়ে যাওয়া সন্তানকে উৎসর্গ করার নজির মেলে কালেভদ্রে। এমনই এক ঘটনা ঘটে কোতোয়ালী থানা এলাকায়, যেখানে মায়ের বিবেকের কাছে হার মেনে যায় তার আবেগ।
[৩] কোতোয়ালী থানা পুলিশ জানায়, ২৪ অক্টোবর রাত অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার পর, মোহাম্মদ আশফাক হোসেন নামে এক ব্যক্তি তার হোন্ডা হর্নেট মোটরসাইকেলটি রিয়াজউদ্দিন বাজার তামাকুমুন্ডি লেইন এর বিপরীত পাশে পার্ক করে তালা মেরে মোবাইল মেরামত করতে যান। কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন তার মোটরসাইকেলটি নেই। ব্যতিব্যস্ত হয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারলেন কোন একজন ছেলে এসে তার নিজের মোটরসাইকেল বলে তা রিক্সায় উঠে নিয়ে গেছে। হতভম্ব হয়ে আশফাক হোসেন তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে আসেন টিম কোতোয়ালীর একটি টহল দলের কাছে। সেখানে টহল টিমের দায়িত্বে থাকা সাব-ইন্সপেক্টর মোঃ মনজুরুল আলম ভূঞাঁ ঘটনা শুনে দ্রুত ছুটে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীনকে (পিপিএম-বার) অবহিত করে এবং তাঁর নির্দেশনায় সম্ভাব্য এলাকা সমূহে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। এই ব্যাপারে ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, অভিযানের এক পর্যায়ে পুলিশকে দেখে জনৈক যুবক জানায় একটি মোটরসাইকেলকে রিকশায় করে জামালখান ওয়ার্ডের দীঘির পাড় এলাকায় নিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি।
[৪] এ তথ্যে অভিযানে এক নতুন মাত্রা আসে, এই সংবাদের ভিত্তিতে আসকার দীঘির দক্ষিণ পাড়ের শতদল ক্লাবের পাশে একটি গলিতে মোঃ তুহিন ভূঁইয়া (২২) নামের যুবকের হেফাজত হতে উদ্ধার করা হয় আশফাক হোসেনের চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি। ওসি মহসীন আরও জানান, নাড়ী ছেড়া পুত্র তুহিন ভূঁইয়া এর এমন অপরাধের কথা জানতে পেরে মা পারভিন আক্তার নিজেই স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে তাকে এলাকা থেকে পালাতে দেননি এবং টহল পুলিশ কে সহায়তা করে নিজেই নিজ সন্তানকে পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মা পারভিন আক্তারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, তার বিবেকের মূল্যায়ন যেন পরাজিত করেছে অন্ধ আবেগের আস্ফালন কে। এমন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সচেতন মা প্রতিটি ঘরে ঘরে থাকলে সমাজে অপরাধ অনেকটাই কমে যেত। কিশোর গ্যাং নামক সামাজিক ব্যধিতে আক্রান্ত কিংবা মাদকাসক্ত হতে পারত না বলেও মনে করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।