ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হয়েছে আগাম ধান কাটার উৎসব। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান কৃষকের ঘরে ওঠে। কিন্তু এবার অনেক কৃষক আগাম জাতের আমন ধান আবাদ করায় আশ্বিন মাসেই শুরু করেছেন ধান কাটা। পোকার আক্রমণ আর নানা রোগবালাইয়ের পরও এবার আমনের বাম্পার ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। বর্তমানে ধানের মূল্য বেশি থাকায় লাভবান হওয়ার আশায় মুখ ভরা হাসি নিয়ে আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত এ জেলার কৃষকেরা।
সরেজমিন গিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্প্রতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোরের সকাল ফর্সা হতে না হতেই সোনামাখা রোদে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের হলুদ ধানের শিষ ঝিকিয়ে উঠেছে। মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন-আমন ধান। আর সেই ধান কাটতে ও মাড়াই করতে ব্যস্ত সময় পার করছে এ জেলার অলস সময় পার করা কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫টি উপজেলায় আমন মৌসুমে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয় উদ্ভাবিত স্বল্প জীবনকালের ধান বিনা-৭, ব্রি ধান ৩৩ ও বিভিন্ন প্রকার উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে মোট আবাদের শতকরা ১০ ভাগ অর্থাত্ ১৩ হাজার ২৬০ হেক্টর।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শীবগঞ্জ গ্রামের কৃষক নজরুল, রবি, রমজান আলী জানান, এ মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের ধানের চাষ করেছি। কাটা-মারাই শেষের দিকে। বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৩ মণ ফলন হচ্ছে। গত বছরও একই জমিতে একই জাতের ধানের চাষ করে ফলন কম পেয়ে কম দামে বিক্রি করেছিলাম। এ বছর ফলন কিছুটা বেশি, দামও বেশি।
তাছাড়া এবছর গবাদিপশু খাদ্য খড়ের চাহিদাও বেশি, বাড়িতে ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে খড়। ফুল সিজনে (মৌসুমে) শ্রমিকের সমস্যা থাকলেও এখন শ্রমিকের সমস্যা অনেকটা কম।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষীরা ভাল ফলন পাচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম বেশি। কৃষকরা যদি দেরিতে ধান বিক্রি করে তাহলে আরও ভালো দাম পাবেন। তাছাড়া আগাম ধান কাটার পর আবার একই জমিতে আগাম আলু ও তৈল জাতীয় ফসল সরিষার চাষ করা যাবে বলে আমি আশা করছি।