শিরোনাম
◈ চট্টগ্রাম বন্দরে সাইফ পাওয়ার টেকের যুগের অবসান, এনসিটির দায়িত্বে নৌবাহিনী ◈ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজের খেলায় তালেবান, পেছনে চীন-রাশিয়া-ইরান-ভারত! ◈ পাকিস্তানকে ঠেকাতে গিয়ে ভারতে বন্যা, তোপের মুখে কঙ্গনা (ভিডিও) ◈ ৫ আগস্ট লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার জাতীয় সংসদ: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে মহানগর বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার ◈ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল ◈ রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসি, আটক করে ‘চাঁদা দাবি’ ছাত্রদল নেতার, সিসিটিভির ফুটেজ ফাঁস ◈ আর একটি হত্যাকাণ্ড ঘটলে সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ: হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের ◈ ধামরাইয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গৃহবধুকে ধর্ষণ, আসামী গ্রেফতার ◈ গাজীপুরে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা স্বপন

প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৩ দুপুর
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: বিভাজনের অদ্ভুত সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমরা

কাকন রেজা: অদ্ভুত একটা সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমরা। যে সময়ে মানুষকে গালি দিয়ে, মৃত্যু কামনা করে বিখ্যাত হওয়া যায়। মেধা-মননের কোনো প্রয়োজন নেই। গালি আর মৃত্যু কামনার কদর্য কৌশল জানলেই হলো, আর কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, গালি জানতে রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিতে হয়। বিনা বিচারে মানুষের মৃত্যু কামনা করা যায় সর্বোচ্চ ফোরামে।
এমন সময়কে কী বলবেন, ক্যানিবাল পিরিয়ড। স্বজাতি ভক্ষণের চর্চা, না ডগমাটিজম। মতান্ধতা। যেখানে বিপরীত চিন্তার কাউকে অ্যাসাসিনেশনের ভাবনা তাড়া করে বেড়ায় সর্বক্ষণ। অবস্থা এমন আমরা রয়েছি ক্যানিবালিজম ও ডগমাটিজমের মিশেল অবস্থানে। যে অবস্থানে প্রতিপক্ষকে নির্মূলের ধারণাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়।

এ সময় অদ্ভুত নয় কি? আপনার বিপক্ষে একটা কথা হলো, তো ফ্যান-ফলোয়াররা নেমে গেলো বিপক্ষওয়ালাদের সাইজ করতে। অথচ তারা ভাবলো না, কেন কথাটি আপনার বিপক্ষে গেলো, ভুলটা কোথায়। ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের একটি কথা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কথাটি নূরের বলা ঠিক হয়নি, এমন কথা তার সাথের লোকগুলো একবারও বললেন না। বললেন না, নূরের কথাটি ভুল হয়েছে তাকে শুধরে নেবার জন্য বলছি এবং তিনি শুধরে নেবেন। তারা সে কথাটিকে জাস্টিফায়েডে লেগে গেলেন। আবার এই কথার বিপরীতে নূরকে গালি দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়াও শুরু করলেন কেউ কেউ। অথচ একবারও চিন্তায় এলো না, এই যে গালি দেয়ার বিজ্ঞাপনী সংস্কৃতি শুরু হলো সেটা সবার বেলাতেই প্রযোজ্য।

নিজের মতের কেউ খারাপ কাজ করেছেন তার কোনো প্রতিবাদ নেই। অথচ একই কাজ বিপরীত মতের কেউ করলে রীতিমতো খড়গহস্ত। ফাঁসি থেকে ক্রসফায়ার কিছুই চাইতে বাকি থাকে না আর। উল্টোদিকে থাকেন নিজের মতের জনকে তুলশী পাতা প্রমাণের ফিকিরে। এই যে দ্বিচারিতা তা সমাজকে ভয়াবহ বিভাজনে বিভক্ত করছে। যাকে তুলনা করতে পারেন স্বজাতি ভক্ষণের সাথে। সময় পাল্টেছে দেখে নরমাংস খাওয়াটা বাদ গেছে। কিন্তু অ্যাসাসিনেশনের চিন্তার রূপটা পাল্টায়নি। আর এই ক্যানিবাল চিন্তাটা বয়ে এনেছে ডগমাটিজম। বাংলাতে মতান্ধতা।

তবে মুশকিল হলো এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সমাজের যে অংশটি সবচেয়ে বেশি কাজ করতে পারতো সেই বুদ্ধিজীবীরা আরও বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন ডগমাটিজমে। চর্চা করছেন নিও-ক্যানিবালিজমের। প্রতিপক্ষকে অ্যাসাসিনেশনের। লেখক, গণমাধ্যমকর্মী, শিল্পীদের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন এমন ইজমে। প্রতিষ্ঠানগুলোও বাদ নেই। যারা এর বাইরে তারাও ক্রমে কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন। তাদের সমস্যা আরো বেশি। তারা যখন বিভাজনের দেয়াল সরাতে চাচ্ছেন তখন দু’পক্ষেই হামলে পড়ছে তাদের উপর। ফলে তারাও চুপ হয়ে যাচ্ছেন। সাথে চুপ হয়ে যাচ্ছে সুস্থ চিন্তার ধারা। সত্যিই বড় অদ্ভুত সময়ে মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। ক্যানিবাল ও ডগমাটিকদের মিলিত বিভাজনের ভয়ংকর সময়।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

 

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়