শাহীন চৌধুরী: [২] সারাদেশেই তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ৫০ টাকা করে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১২ কেজি সাইজের বোতলে এই টাকা বেড়েছে। বর্ধিত এই মূল্য অন্য সাইজের বোতলের ক্ষেত্রেও এই হারে কার্যকর হবে। এলপিজির’র মূল্য নিয়ন্ত্রণে উচ্চ আদালত এবং এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি’র উদ্যোগের মধ্যেই এই দাম বৃদ্ধি করেছে ব্যবসায়িরা।
[৩] সারাদেশে ডিলারদের গত সপ্তায়ই এলপিজির দাম বৃদ্ধি করতে বলেছে অপারেটররা। তবে এবার কেন্দ্রীয় ভাবে দাম না বাড়িয়ে কৌশলে ডিলারদের দিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এলপিজি আমদানি এবং বিপণনকারীরা। এতে উচ্চ আদালত এবং বিইআরসি সরাসরি তাদের ধরতে পারবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
[৪] ইতিপূর্বে দেশের ভোক্তা পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য এলপিজির মূল্য নির্ধারণে বিইআরসিকে একটি রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। ওই আদেশে বলা হয়েছে আইন অনুযায়ী এলপিজির দাম নির্ধারণের এখতিয়ার বিইআরসির। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিইআরসি কমিটি গঠন করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। এই প্রতিবেদনের উপর সম্প্রতি একটি গণশুনানিও করেছে বিইআরসি। ওই শুনানিতে বলা হয়, কিছু উদ্যোগ নিলে দেশে এলপিজির দাম আরও কমানো সম্ভব। এমনকি প্রতিবেশী দেশে আমাদের চেয়ে অনেক কম দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিইআরসি উল্লেখ করে।
[৫] এদিকে জ্বালানি বিভাগ বলছে তারা এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণ করবে। আর এটি করতে হলে বিইআরসির মাধ্যমেই মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। তবে সরকারের এসব উদ্যোগের মধ্যেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হলো এলপিজির। এতে চাইলেও সেখান থেকে খুব বেশি দাম কমানো সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
[৬] এলপিজির দাম বৃদ্ধি করায় সংশ্লিষ্টদের ব্যবসায়ীক অনুমোদন এবং লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে বিইআরসিকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। এপ্রসঙ্গে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব এর জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনার মধ্যে এলপিজির দাম বাড়াতে পারে না কোম্পানিগুলো। দাম যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে জন্যই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যেই দাম বৃদ্ধি করে দিয়েছে তারা।
[৭] অবশ্য বিইআরসির সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে হলে একটি প্রবিধানমালা করতে হবে। এই প্রবিধানমালা ২০১২ সাল থেকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। এখনও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি। তিনি বলেন, বিইআরসি কাজ করছে। আপাতত দাম নির্ধারণে কী কী মানদণ্ড থাকতে হবে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।
[৮] এদিকে বিইআরসিকে দেয়া ক্যাবের ওই চিঠিতে অবৈধভাবে দাম বাড়ানোর জন্য এলপিজি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আইনের ২২ (খ) এবং ৩৪ ধারা মতে এলপিজির মূল্য নির্ধারণের একক এখতিয়ার বিইআরসির। গত ২৫ আগস্ট উচ্চ আদালত গণশুনানির মধ্যমে এলপিজির দাম নির্ধারণের জন্য গৃহীত কার্যক্রমের উপর ৩০ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে আদেশ দেন। এই নির্দেশ বলবত থাকার মধ্যে এলপিজির দাম বৃদ্ধি অবৈধ বলে চিঠিতে মন্তব্য করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :