কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক গৃহবধূর সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে তাকে আটকে রেখে রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৫ দিন আগে সংঘটিত এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী শনিবার থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উলিপুর পৌরসভার একটি গ্রামে বসবাস করেন দুই সন্তানের জননী (২৫) এক গৃহবধূ। গরিব বাদাম বিক্রেতা স্বামী বাড়িতে না থাকার কারণে প্রতিবেশী ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম (৩০) তার সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর রবিউল ওই গৃহবধূকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন। এরপর ওই গৃহবধূ তার প্রস্তাবে দেড় বছরের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে উলিপুর বাজারে রবিউল ইসলামের সাথে দেখা করেন। পরে একটি অটোরিকশাযোগে রবিউল ইসলাম ওই গৃহবধূকে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রাজারঘাট গ্রামের আবু বক্করের (৩৫) ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন।
এসময় রবিউল ইসলামের আরো কয়েক সহযোগী ওই গৃহবধূকে রাতভর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। পরদিন সকালে তারা ঘরের মধ্যে গৃহবধূকে একা ফেলে পালিয়ে যান। এরপর তিনি বিধ্বস্ত অবস্থায় সেখান থেকে বের হয়ে অটোরিকশাযোগে চিলমারী উপজেলায় তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
গৃহবধূর শ্বশুর বলেন, ঘটনার কয়েকদিন পর তার পুত্রবধূ বাড়িতে ফিরে আসলে রবিউল ইসলাম পুনরায় তাকে আবারও কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এতে ওই গৃহবধূ রাজি না হলে রবিউল ইসলাম ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করার ভয় দেখায়। ফলে গৃহবধূ উপায় না পেয়ে পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানায়। সেইসাথে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
শনিবার রবিউল ইসলামসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে নির্যাতিত গৃহবধূ উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আবু বক্কর, কায়ছার আলী, সোবহান আলী লিটন ও মমিনুল ইসলাম নামে চারজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল আসামি রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) রুহুল আমীন জানান, ভুক্তভোগী নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পরে রবিউলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে মূল আসামি রবিউলকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, ভুক্তভোগী গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।