আজিজুল ইসলাম: [২] ২০১৭ সালের জুনে সখের বশে মাল্টা চারা রোপন করেন ইমান আলী। সেই মাল্টা বাগানে এখন ধরেছে মাল্টা। মাল্টা বাগান করে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এলাকায় তার মাল্টা বাগান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিনই উৎসাহী এলাকাবাসী তার বাগান দেখতে আসছেন। তার দেখাদেখি বর্তমানে অনেক কৃষকই মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ইমান আলী যশোরের বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়নের খোর্দ বনগ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে।
[৩] সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা যায়, শরতের আলোছায়ার খেলায় সবুজ পাতা ভেদ করে হলুদ রঙের আভা ছড়িয়েছে টক-মিষ্টি ফল মাল্টা। প্রতিটি গাছে ঝুলছে প্রায় ২০০-২৫০ মাল্টা। এরই মধ্যে সবুজ থেকে তা হালকা হলুদ রঙ ধারণ করেছে। পুষ্ট হয়ে ওঠা মাল্টার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। দক্ষিণের ঝিরিঝিরি বাতাসে সেই মাল্টা দোল খাচ্ছে।
[৪] বাগানের মালিক কৃষক ইমান আলী জানান, ১৫ শতক জমিতে ৪৫টি বারি-০১ মাল্টার চারা রোপণ করেন। চলতি বছরের মার্চে গাছে ফুল আসে। তখন ফুল ঠেকাতে হরমোন স্প্রে করেন। এর একমাস পরেই আসে ফল। বর্তমানে তার বাগানের মাল্টার গায়ে হলুদ রঙ ধারণ করেছে। মাল্টার সাথে সাথী ফসল হিসেবে তিনটি আবাদও করেছেন। এতে তার বাড়তি আয় হয়েছে।
[৫] কৃষক ইমান আলী আরও জানান, কখনোই ভাবেননি গাছে এভাবে ফল আসবে। তার সহকর্মী কৃষকদেরও ধারণা ছিলো এ অঞ্চলের মাটিতে মাল্টা হবে না। এখন সে ধারণা এখন বদলে গেছে। মাল্টা চাষে তিনি বাড়তি কোন যত্ন নেননি। সাথী ফসল আবাদের সময় যে সার ব্যবহার করেছিলেন তা থেকেই মাল্টার গাছ বেড়ে উঠে ফল দাঁড়িয়েছে। এবার তিনি বাণিজ্যিকভাবে আরো অধিক জমিতে মাল্টা চাষ করবেন।
[৬] বাগানের মালিকের ছেলে রুহুল আমিন জানান, কয়েকটি মাল্টা স্থানীয় বাজারের ফল ব্যবসায়ীদেরকে দেখিয়েছেন। মাল্টার আকার ও সাইজ তাদের পছন্দ হয়েছে।
[৭] তিনি জানান, একেবারেই বাজারে পাওয়া মাল্টার মতো খেতে, তবে স্বাদ অনেকটা মিষ্টি। মাল্টার ভেতরেও হলুদ রঙ আসতে শুরু করেছে। তবে মাল্টায় পুরোপুরি হলুদ রঙ আসলে তারা নিবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
[৮] তৎকালীন বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৭ সালে উপজেলার ২৪টি ব্লকের ১৫টিতে চারা বরাদ্দ আসে। ওই সময় কৃষকদের চারা ও কিছু রাসায়নিক সার দেয়া হয়। এতে সরকারি বাড়তি বরাদ্ধ না থাকলেও সর্বদা কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
[৯] বর্তমান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা দেশে সবজির জন্য পরিচিত। পরীক্ষামূলক মাল্টা চাষে যে সাফল্য পাওয়া গেছে তাতে মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমেধ্য অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে অল্প পরিসরে বাগান গড়েছেন। এমন হারে মাল্টার চাষ সম্প্রসারণ হলে কয়েক বছরের মধ্যে মাল্টা হিসেবেও এ অঞ্চলের পরিচিতি পাবে। এক্ষেত্রে আগ্রহীদের চারা দেয়া থেকে শুরু সব ধরণের পরামর্শ প্রদান করবে কৃষি অফিস। সম্পাদনা: হ্যাপি