মাস্ক সংস্কৃতির মত চোখের আড়ালে থাকা ছোট্ট এই বিষয়টি কোভিড মহামারিতে জাপানিদের অনেক বড় এক সুবিধে দিয়েছে। অন্যদিকে মাস্ক পরার বিরুদ্ধে মিছিল হয় যে সব রাষ্ট্রে প্রকৃতি তাঁদের লাঞ্চিত করলে অবাক হবার কিছু নেই। সততা আর নিষ্ঠায় নিজ থেকে নিজেদের সাহায্য করেন যারা, তাঁদের প্রতি সদয় হতে সৃষ্টিকর্তা বলেন আর প্রকৃতি বলেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বৈকি। মন্ট্রিয়লে দেখেছি মাস্কের বিরুদ্ধে মিছিল, অনেকটা হোয়াইট সুপ্রিমেসী আর ট্রাম্পের ভক্তদের কায়দায়। এই মিছিল বেপরোয়া মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করে যার মূল্য দিচ্ছে কানাডা আবার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে।
গ্রেটার টোকিও’র পৌনে চার কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে সবকিছু প্রায় খোলা অবস্থায় কোভিড সংক্রমণ দিনে তিনশতের কম। কোভিড সংক্রমণ চাপিয়ে রাখার জাপানিদের এই সফলতার দিকে তাকাতে হলে জাপানি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এদের সহজাত সংস্কৃতির দিকেও তাকাতে হবে। কেবল এই কোভিড যুগ নয়, রাস্তাঘাটে মাস্ক পরা মানুষজন জাপানে যুগ যুগ ধরে দৈনন্দিন দৃশ্যপট। সামান্য ঠাণ্ডা লাগলেই জাপানিরা মাস্ক ছাড়া বের হয় না। এর মূলে জাপানিদের দীর্ঘকালের অভ্যাসজাত ফেলো ফিলিংস, নিজের সমস্যায় অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত বা বিব্রত না করা। আর এখন এই কোভিড সময়ে রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, অফিস পাড়া সবখানে প্রায় ১০০% মাস্ক পরা মানুষ দেখবেন। একা গাড়ী চালাচ্ছে কিন্তু অভ্যাসের কারণে মাস্ক পরে আছে রাস্তাঘাটে এরকম দৃশ্য অনেক। জাপানের মত একটি রেজিমেন্টেড সমাজ তো তাঁর রেজিমেন্টেড আমলাতন্ত্র, নিষ্ঠাবান টেকনোক্রেট আর নিবেদিত রাজনৈতিক নীতি নির্ধারকদের সততা আর আন্তরিকতার সুবিধেটুকু পাবেই।
ভ্যাকসিন ড্রাগের চেয়ে আপাতত মাস্কই পরাক্রমশালী। মাস্ককে অসন্মান করায় অনেক পরাক্রমশালী রাষ্ট্রপ্রধানকেও এর মূল্য দিতে হচ্ছে। মাস্ককে একটু সন্মান দেখালে নির্বাচনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাস্ক সম্ভবত বন্ধুত্বসুলভ প্রতিদান দিত, এভাবে ট্রাম্পকে নির্বাসনে পাঠাতো না, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার কেন্দ্রেও তৈরি হতোনা অস্থিরতা।
মাস্ক ব্যবহারে আন্তরিক হোন, মাস্ক আপনাকে হতাশ করবে না।