শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:০০ সকাল
আপডেট : ০২ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঋণ দিতে মানুষ খুঁজছে ব্যাংক, জমছে ‘অলস অর্থ’

ডেস্ক রি পোর্ট: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে দিন দিন বাড়ছে অলস অর্থের পাহাড়। বিনিয়োগ মন্দায় ঋণ নেওয়ার লোক পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। বাধ্য হয়ে বিকল্প বিনিয়োগে যেতে হচ্ছে তাদের। আর এই বিকল্প বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোকে উৎসাহিত করতে মূলধন সংরক্ষণে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।সময়টিভি

অর্থাৎ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও বিকল্প বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতদিন বিকল্প বিনিয়োগে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করলে ঝুঁকিভার ১৫০ টাকা ধরে ১০ শতাংশ বা ১৫ টাকা মূলধন সংরক্ষণ করতে হতো। এখন ১০০ টাকা বিনিয়োগ করলে তার ঝুঁকিভার ১০০ টাকা ধরে ১০ শতাংশ বা ১০ টাকা মূলধন রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ’ এ সংক্রান্ত সাকুর্লার জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে এ খাতে ব্যাংকগুলোর মূলধন সংরক্ষণের চাপ কমবে এবং বিকল্প বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। এর আগে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক মূলধন পর্যাপ্ততা নিয়ে ২০১৪ সালে নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নীতিমালার আওতায় কোন খাতে বিনিয়োগে ঝুঁকিভার কী হারে হবে, সেটি নির্ধারণ করা হয়। এতে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিপরীতে ঝুঁকিভার ১৫০ শতাংশ আরোপের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

বুধবারের সার্কুলারে বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিকল্প বিনিয়োগ খাতের প্রসারের স্বার্থে ভেঞ্চার ক্যাপিটালসহ বিকল্প বিনিয়োগের আওতাভুক্ত সব খাতে বিনিয়োগের বিপরীতে ১০০ শতাংশ হারে ঝুঁকিভার নির্ধারণ করা হলো। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

বাংলাদেশে নতুন এই বিকল্প বিনিয়োগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, বিকল্প বিনিয়োগ বা প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ইমপ্যাক্ট ফান্ড। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০১৫ সালের জুনে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট বা বিকল্প বিনিয়োগ আইন ২০১৫ প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলোতে আমানত আসার প্রবণতা বাড়লেও তারা সেইভাবে বিনিয়োগ করতে পারছে না। যদিও আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু নিশ্চিত মুনাফা ও নিরাপদে টাকা ফেরতের আশায় সাধারণ মানুষ ব্যাংকগুলোতেই টাকা রাখছে। এছাড়া এই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহও বেড়েছে। এই বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নিয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সমপরিমাণ নগদ টাকা ব্যাংকের হাতে এসেছে। এতে ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে ব্যাংকের হাতে তারল্য বেড়ে গেছে। এ ছাড়া মহামারির মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতি ও আমানতের প্রবৃদ্ধিতে গতি আসাও তারল্য বাড়াতে সহায়তা করেছে। এর বাইরে নগদ জমার হার (সিআরআর) কমানোর ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে তারল্য বেড়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে ব্যক্তি খাতের ঋণ বিতরণ বাড়েনি। এমনকি সরকারও আগের তুলনায় ঋণ নেওয়া কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া কমে গেছে ট্রেজারি বিল-বন্ডের বিপরীতে আয়ের পরিমাণও।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সতর্ক থাকছে। যে কারণে করোনাকালে তারল্যের পরিমাণ বেড়ে গেছে রেকর্ড পরিমাণ।

এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমত, আমানত বেড়ে যাওয়া ছাড়াও বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে ব্যাংকে তারল্য বেড়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, সিআরআর কমানোর ফলে নগদ টাকা বেড়েছে। তৃতীয়ত, রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ার কারণেও তারল্য বেড়েছে।

তবে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন পুরোপুরি হলে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত গতি ফিরলে, ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, করোনার অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় বিভিন্ন খাতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এই প্রণোদনা প্যাকেজের ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য বেশ কয়েকটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন এবং বিদ্যমান তহবিলের আকার বাড়ানো হয়েছে। এর আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫১ হাজার কোটি টাকার মতো তহবিলের জোগান পাচ্ছে ব্যাংকগুলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়