রাশিদ রিয়াজ : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার দেশে কোভিডে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের আহবান জানালেও জাপানের টয়োটা মোটর কর্পোরেশন বলেছে দেশটিতে তারা আর ব্যবসা সম্প্রসারণ করবে না। কারণ ভারতে করের বোঝা অত্যধিক। টয়োটার ভারতীয় শাখা টয়োটা কির্লোস্কার মোটরের ভাইস চেয়ারম্যান শেখর বিশ্বনাথন জানান, ভারতে গাড়ি ও মোটরবাইক নির্মাতাদের ওপরে অত্যধিক হারে কর বসানো হয়েছে। এর ফলে অনেকেই গাড়ি কিনতে পারবেন না। গাড়ির কারখানায় কাজ থাকবে না। নতুন চাকরিও সৃষ্টি হবে না। টাইমস অব ইন্ডিয়া
এক সাক্ষাতকারে বিশ্বনাথন বলেন, টয়োটা এদেশে বিনিয়োগ করার পরেই একটা বার্তা পেয়েছে। তা হল, কর বৃদ্ধি। অনেকেই পছন্দ করছে না। টয়োটা এদেশ ছেড়ে যাচ্ছে না। কিন্তু ব্যবসা সম্প্রসারণের কোনও পরিকল্পনা নেই। টয়োটা ১৯৯৭ সাল থেকে ভারতে ব্যবসা শুরু করে। এর ভারতীয় ইউনিটের ৮৯ শতাংশের মালিক জাপানি সংস্থা টয়োটা। গত আগস্টে দেশে গাড়ির বাজারের ২.৬ শতাংশ টয়োটার দখলে ছিল। এর আগে তাদের মার্কেট শেয়ার ছিল পাঁচ শতাংশ। ভারতে গাড়ি, টু হুইলার এবং স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকলের ওপরে ২৮ শতাংশ কর দিতে হয়। যদিও বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ওপরে অত কর দিতে হয় না। এছাড়া গাড়ির দৈর্ঘ্য ও ইঞ্জিনের আয়তনের ওপরে ভিত্তি করে এক থেকে ২২ শতাংশ লেভি ধার্য করা আছে। সব মিলিয়ে চার মিটার লম্বা ১৫০০ সিসি ইঞ্জিনের এক স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকলের ওপরে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কর নেওয়া হয়।
ভারতে কারখানা খোলার জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোকে ২৩’শ কোটি ডলারের ইনসেনটিভ দিচ্ছে মোদী সরকার। যদিও ২০১৭ সালে ভারত ছেড়ে চলে যায় মার্কিন গাড়ি তৈরি কোম্পানি জেনারেল মোটর্স। অন্যদিকে গত বছর আরেক মার্কিন কোম্পানি ফোর্ড মোটর্স ভারতে বিনিয়োগ করতে রাজি হয়। তারা ভারতীয় কোম্পানি মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসা করবে। কোভিড মহামারীর আগেই ভারতে গাড়ির বাজারে মন্দা দেখা দিলেও এ শিল্পে জিএসটি হ্রাস করায় গাড়ি বিক্রি বেড়ে যায়। এই শিল্পে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারালেও তারা নতুন করে আশান্বিত হয়। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, গাড়ির বাজার মন্দার আগের পর্যায়ে আসতে এখনও চার বছর লাগবে।