নিজস্ব প্রতিবেদক: [২] হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
[৩] ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রোবরার বিকেলে রাজধানীর বনানীর ২৭ নম্বর রোডের এ ব্লকের ৪৫ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ তলায় এশিয়ান ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামক একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৪] গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী গোলাম মাজেদ (৫০), নারায়ণ সরকার (৩৫), মো. মেহেদী (১৯), মো. ইমতিয়াজ (৩১) ও মো. এনায়েত উল্লাহ (৪০)। তাদের কাছ থেকে একাধিক ভুয়া নিয়োগপত্র এবং প্রার্থীদের কাছ থেকে নেয়া বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, চাকরি প্রত্যাশিদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার চারটি রেজিস্টার, বিভিন্ন ভুয়া মেডিকেল সনদপত্র, ভুয়া ডাক্তারের সিলমোহর, প্রার্থীদের আবেদনপত্র ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে লোক নিয়োগের ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার জব্দ করা হয়েছে।
[৫] সোমবার সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জিসানুল হক বলেন, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনলাইনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে কাজের জন্য নিয়োগ দেয়ার নামে চাকরি প্রত্যাশিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরি প্রত্যাশিদের স্যামসাং নামক একটি কোম্পানীর ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছিল প্রতারক চক্রটি। এরপর চাকরি না দিয়ে নানা টালবাহানা করছিল। চাকরি প্রত্যাশিরা অফিসে গিয়ে জানতে চাইলে চক্রটি তাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয়।
[৬] তিনি আরও জানান, এ প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও এশিয়ান ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের মালিক আশরাফ খান ওরফে সুলতান মাহমুদ। তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় বনানী থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতারক আশরাফ খানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
[৭] এদিকে সিআইডির একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মালিক আশরাফ খানের নামে ২টি পাসপোর্ট ও ৪টি এনআইডির সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারীরা। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি নিয়েও মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে। তার গ্রামের হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও বলা হতো হবিগঞ্জে। এছাড়া অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটি থেকে একজন নারীর নামে নিবন্ধিত টিন সাটিফিকেট পাওয়া গেছে।
[৮] সূত্রটি জানায়, আশরাফ খানের নামে পাওয়া ৪টি জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করে তিনটির একই নম্বর ও অপরটির ভিন্নতা পাওয়া গেছে। নামেও রয়েছে ভিন্নতা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, সাবরিনা বা সাহেদের মতো আশরাফ খানও প্রতারণার জন্য চারটি আইডি তৈরি করেছেন। তবে এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।