শিমুল মাহমুদ : [২] ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্সের মেডিকেল অ্যনথ্রোপোলজি অ্যান্ড গ্লোবাল হেলথ বিভাগের রিডার ডা. শাহাদুজ্জামান বলেন, সাধারণ চিকিৎসা আর মহামারি মোকাবিলায় ভিন্নতা আছে। মহামারি বিষয়টি পুরোপুরি পাবলিক হেলথ ইস্যু। আর করোনা মোকাবিলায় প্রথমে দরকার সংক্রমণ বন্ধ করা। ঘরে থেকে আর হাত ধুয়ে মানব জাতির এত উপকার করা যায়, সেটা জানার সুযোগ সভ্যতার এতো বছরেও আসেনি।
[৩] তিনি আরও বলেন, শুরু থেকে আমাদের ফ্রেমিংটা ছিলো ভুল। করোনাকে মেডিকেল সমস্যা হিসেবে দেখা হয়েছিলো কিন্তু করোনা একটি পাবলিক হেলথ প্রবলেম। মহামারিতে দরকার সামাজিক যৌথ উদ্যোগ, সেখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করার প্রধান বিষয় হলো কমিউনিকেশন।
[৪] জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গুর সময় আমরা দেখেছি, যারা সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তাদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ছিলো না। একই পরিস্থতি আমরা আবার দেখতে পাচ্ছি। আমাদের দেশে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে রাজনীতিকরা উপেক্ষা করছেন, যে কারণে সাধারণ মানুষ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। সম্প্রতি ঈদুল আজহায় বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। আস্থাহীনতা তৈরিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দায় আছে। কেউ কেউ ওষুধ পেয়ে গেছি বলেছেন, সেটা কিন্তু পরবর্তীতে জনগণকে আস্থাহীনতায় ফেলেছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কেবল প্রান্তিক মানুষ নয়, শিক্ষিত মানুষের ভেতরেও হেলথ লিটারেসির অভাব আছে।
[৫] জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ এবং পাবলিক হেলথ, বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ডা. তৌফিক জোয়ার্দার বলেন, মহামারি ছাড়াও বাংলাদেশের হাসপাতালে রোগী নেই এটা ভাবা যায় না। কেউ যদি দাবি করেন হাসপাতালগুলোতে রোগী নেই, এর অর্থ হলো মানুষ হাসপাতালে যেতে সাহস পাচ্ছে না কিংবা তারা মনে করছে না, হাসপাতালে গিয়ে তারা সঠিক চিকিৎসা পাবে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি। আমরা একটি গবেষণা করেছি, তাতে দেখা গেছে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা, চিকিৎসক ও চিকিৎসা দানকারীদের ওপর জনগণের এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চিকিৎসক ও চিকিৎসা দানকারীদের আস্থা কম। হঠাৎ আমরা দেখলাম কিছু মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়া হলো।
[৬] শনিবার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা এ মত জানিয়েছেন।