সুব্রত বিশ্বাস: হস্তচালিত তাঁতে শিল্পোন্নত দেশ হওয়া যাবে না সত্য, শিল্পোন্নত দেশ হতে প্ল্যানিং চাই, জাতীয়তাবাদী নেতারা যে শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখছেন, তাতে কি তাঁত-খাদির ঠাঁই হওয়া সম্ভব? তাঁত-খাদি হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ বলতেই পারেন, বাংলাদেশ যখন সর্বশক্তিতে শিল্পোন্নত দেশ হতে চাইতেছে, তখন প্রাগৈতিহাসিক হস্তচালিত তাঁতের স্থান কোথায়? ইহা সত্য যে শিল্পায়নের ছন্দের সহিত তাঁত খাদি পা মিলাতে পারবে না, কিন্তু তবুও তাকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে রাখতে হবে। কারণ তা শুধু শিল্প, উৎপাদন বা অর্থনীতির প্রশ্ন নয় হস্তচালিত তাঁতের গুরুত্ব অন্যত্র। প্রকৃতই হস্তচালিত তাঁতে বাংলাদেশের আত্মা বিরাজ করে।
হ্যান্ডলুম বোর্ড— রাষ্ট্রীয় শিল্পযজ্ঞে যাতে শ্রমনিবিড়, গ্রামীণ ক্ষেত্রটি বাদ না পরে যায়, তা নিশ্চিত করাই মূল উদ্দেশ্য হওয়া। এখনও কতো মানুষ জীবিকা হিসেবে হস্তচালিত তাঁতের উপর নির্ভরশীল, সেই হিসাব সরকারের নিকট থাকবারই কথা। হ্যান্ডলুম বোর্ডের প্রধানতম দায়িত্ব ছিল এই মানুষগুলির স্বার্থরক্ষা করা, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করা। সমুদ্রে ভাসবার শক্তি হস্তচালিত তাঁত নামক ডিঙিটির নেই। এখানেই সরকারের দায়িত্ব। কেউ বলতে পারেন, আরও পাঁচটি শ্রমনিবিড় ক্ষেত্র যেমন ভাবে কালের গতিতে হারাই, হস্তচালিত তাঁতও যদি তেমন হারিয়ে যায়, তাতে ক্ষতি কী? ক্ষতি এইখানেই যে, খাদিতে বাংলাদেশের আত্মা বিরাজ করে। তাতে ভর করে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ সর্বজনীন হয়েছে। সুতরাং, হস্তচালিত তাঁতকে বাজার বা অর্থনীতির মানদণ্ডে নয়, বিচার করতে হবে তার ঐতিহাসিক গুরুত্বের মাপকাঠিতে। ফেসবুক থেকে