ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা শহরের বেশ কিছু এলাকা থেকে অন্তত ৩০ হাজার কুকুর শহরের বাইরে কোন লোকালয়ে স্থানান্তরিত করতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: আবু নাছের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো: আবু নাছের বলেন, বাসিন্দাদের কাছ থেকে কুকুর সম্পর্কিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী কুকুরগুলোকে মাতুয়াইল এলাকায় স্থানান্তরিত করার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে কুকুরগুলো খাবারের সংকটে পরার আশঙ্কা রয়েছে বলে সেটা বাতিল করা হয়েছে।
কুকুরগুলোকে স্থানান্তরিত করার পরও যাতে খাবারের সংকট তৈরি না হয় তার জন্য সেগুলোকে ঢাকার বাইরে যেখানে মানুষের বসবাস করে সেখানে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তবে সেটি কোন এলাকা তা এখনো সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকায় বাস করতেন নাদিরা জাহান। কুকুরের উৎপাতে সে এলাকা ছেড়ে এখন থাকেন পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়। কিন্তু এখানেও সেই একই অবস্থা। তবে এই এলাকায় তাঁর বাসা থেকে বের হওয়ার একাধিক রাস্তা থাকায় যাতায়াতের পথ পরিবর্তন করে চলাচল করছেন তিনি।
ঢাকা শহরের রাস্তায় কুকুরের আনাগোনা প্রায়ই চোখে পড়ে। এছাড়া আবাসিক এলাকা, গলির মুখে বা যেখানে ময়লা জমে থাকে সেখানে একাধিক কুকুর দেখতে পাওয়া যায়।
কর্তৃপক্ষ জানায়, সম্প্রতি কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু সেটিতে ত্রুটি থাকায় এদের বংশ বৃদ্ধি হওয়ার কারণে ঢাকার রাস্তায় হঠাৎ করেই কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
তবে রাজধানীর মিরপুর এলাকার মানুষজন কুকুরের উৎপাত থেকে কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। ইশরাত জাহান নামের মিরপুরের এক বাসিন্দা বলেন, সে এলাকায় অনেক কুকুর থাকলে সেখানকার বাসিন্দারা ভয় পান না বরং তারা নিয়মিত কুকুরদের খাবার দেন।
এদিকে কুকুরগুলোকে স্থানান্তরের বিরোধিতা করেছেন প্রাণী কল্যাণ নিয়ে কাজ করা আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, স্থানান্তর করলে আসলে সমস্যা কমবে না বরং আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে এনিমেল কেয়ার ট্রাস্ট বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের পরিচালক আফজাল খান বলেন, এতো সংখ্যক কুকুরকে একসাথে কোন একটি অঞ্চলে ছেড়ে দেয়া হলে সেখানে অবশ্যই খাদ্য সংকট দেখা দেবে। মফস্বল বা গ্রাম্য এলাকায় যদি কুকুরগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই খাবারের সংকট হবে।
তিনি আরো বলেন, খাবারের সংকট হওয়ার কারণে তখন কুকুরগুলো মানুষকে কামড়ানোর চেষ্টা করবে
এছাড়াও কুকুর নিধন এবং স্থানান্তর বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে তিনি স্থানান্তরের পরিবর্তে কুকুরগুলোকে বন্ধ্যা করা এবং জলাতঙ্ক টিকা দেয়ার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে কুকুর নিধন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত। পরে সেবছরই ঢাকার সিটি কর্পোরেশন কুকর নিধন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে কুকুরকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা