সুজন কৈরী : [২] সিআইডির এসপি পরিচয়ে চতুরতার সঙ্গে থানা পুলিশকে ব্যবহার করে বিভিন্ন হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাকারী দুই প্রতারককে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আটকরা হলেন- মো. আকমল হোসেন (৪৫) ও মো. জহিরুল ইসলাম ওরফে দিপক (৫৫)।
[৩] রোববার রাতে ও সোমবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট।
[৪] সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম টিমের ইনচার্জ এডিসি আশরাফ উল্লাহ বলেন, আটকদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের ১০টি সীম কার্ড, নগদ ১৮ হাজার টাকা, বিভিন্ন উর্ধতন সরকারী কর্মকর্তাদের ভিজিটিং কার্ড এবং আকমলের ছবি সম্বলিত মানবাধিকার সংস্থার ২টি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
[৫] আশরাফ উল্লাহ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আকমল জানিয়েছেন, তিনি প্রথমে নিজেকে হিউম্যান রাইট কমিশনের সদস্য পরিচয়ে জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে দেশের বিভিন্ন থানার ডিউটি অফিসারের নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে ডিউটি অফিসারের নম্বরে ফোন দিয়ে নিজেকে সিআইডির এসপি পরিচয়ে ওই থানার একটি এলাকার নাম উল্লেখ করে জানতে চান ‘তোমাদের ওই এলাকায় কোন পার্টি ডিউটিতে আছে তার অফিসারকে বল আমার এই নাম্বারে ফোন দিতে’। ওই এলাকার অফিসার ফোন দিলে আকমল অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে নিজেকে সিআইডির এসপি পরিচয় দিয়ে একটি হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে বলে ‘তুমি তোমার ডিউটি এলাকার অমুক হাসপাতালে গিয়ে হাসপাতালের মালিক বা পরিচালককে আমাকে ফোনে ধরিয়ে দাও’। দায়িত্বরত অফিসার তার কথা মতো হাসপাতালের মালিক বা পরিচালককে ফোনে ধরিয়ে দিলে আকমল নিজেকে সিআইডির এসপি পরিচয়ে বলে ‘আপনিতো আপনার হাসপাতালের নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন, আপনার ফাইলটি এখন আমার কাছে’।
[৬] ফাইলটি পাশ করে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করে। এভাবে বিকাশের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেন আকমল।
[৭] পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফ উল্লাহ বলেন, আকমলের গুরু হিসেবে আটক জহিরুল কাজ করতেন। উদ্ধার হওয়া মানবাধিকার সংস্থার কার্ডগুলো করে দিয়েছেন। জহিরুল বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তার ভিজিডিং কার্ড সংগ্রহ করে উর্ধতন কর্মকর্তার মতো কিভাবে কথা বলতে হয় তা শেখাতেন। এছাড়া আকমল পুলিশের হাতে আটক বা অন্য কোনো ঝামেলায় পরলে জহিরুল মোবাইলে নিজেকে বিভিন্ন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ছাড়ানোর জন্য তদবির করতেন। বিনিময়ে আকমল প্রতারণার মাধ্যমে যে টাকা আয় করতেন, তার তিন ভাগের দুই ভাগ জহিরুল নিতেন।
[৮] আটকদের বিরুদ্ধে রামপুরা এলাকার বেটার লাইফ হাসপাতালের পরিচালক আবুল খায়ের মানিক বাদি হয়ে রামপুরা থানায় মামলা করেছেন।
[১০] আশরাফ উল্লাহ বলেন, আটকদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আকমলের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর জহিরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে তথ্য পেতে জহিরুলের বিরুদ্ধে আবারও রিমান্ড আবেদন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :