ডেস্ক রিপোর্ট: চড় মারার প্রতিশোধ নিতেই খাগড়াছড়ির রামগড়ের কালাডেবা এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. ওমর ফারুককে (২৮) হত্যা করেন মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা নামে এক যুবক।
চাঞ্চল্যকর ফারুক হত্যাকাণ্ডের ২০ দিনের মাথায় রামগড় থানা পুলিশ শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষে ফারুকের ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বদৌলতে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকারী মৃদুল কান্তি ত্রিপুরাকে রামগড়ের কালাডেবা এলাকা থেকে শনিবার (১ আগস্ট) গ্রেফতার করে। এ সময় মো. ওমর ফারুকের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা রামগড় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালাডেবা এলাকার উপেন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে।
শনিবার (০১ আগস্ট) খাগড়াছড়ির আমলী আদালতের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা।
রামগড় থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, খুন করার পর নিয়ে যাওয়া ওমর ফারুকের স্মার্টফোন অনুসরণ করেই খুনিকে গ্রেফতার এবং হত্যার ক্লু উদঘাটন করা হয়।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা বলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে রাস্তার পাশে পা মেলে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় ওমর ফারুক ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ মৃদুলের পায়ের সঙ্গে লেগে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। এতে ফারুক রাগান্বিত হয়ে মৃদুলকে গালাগাল করেন। একপর্যায়ে তার গালে থাপ্পড় মারেন।
হত্যাকাণ্ডের দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ফারুক ছাতা মাথায় ও মোবাইলের হেডফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘটনাস্থলে সেতুর ওপর অপেক্ষারত মৃদুলকে অতিক্রম করে চলে গেলে মৃদুল পিছু নেন। কিছুদূর যেতেই কাঠ দিয়ে ছাতার ওপর ফারুকের মাথায় সজোরে আঘাত করেন মৃদুল। আঘাতে ফারুক মাটিতে পড়ে অচেতন হয়ে গেলে ফারুকের ব্যবহৃত মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যান মৃদুল।
ওসি মো. শামসুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ফারুকের ব্যবহৃত স্মাটফোনের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। ফোনটি ঘটনার দিন ভোরে চালু করে আবার বন্ধ করে দেয়। ১৩ জুলাই ফোনটিতে নতুন সিম লাগিয়ে ব্যবহার শুরু করেন মৃদুল। তারই সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১১ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালাডেবা বাজার থেকে বাড়িতে ফেরার পথে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত ফারুককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত ওমর ফারুক রামগড়ের কালাডেবা এলাকার আলী নেওয়াজের ছেলে। তিনি একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছিলেন।জাগো নিউজ, প্রিয়ডটকম
আপনার মতামত লিখুন :