ইসমাঈল আযহার: [২] কলকাতার একটি বহুতল ভবনে এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন ওই দম্পতি। প্রতিবেশীদের দাবি, স্বামী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ওই দম্পতি তাদের ফ্ল্যাটে থাকতে পারবে না। আকস্মিক এই ঘটনার পরে পাটুলি থানায় ইমেইলে অভিযোগ দায়ের করে ওই দম্পতি। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই সময়, ডিডব্লিউ, বাংলাট্রিবিউন
[৩] জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই কলকাতার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে পাটুলি অঞ্চলের কেন্দুয়া পাড়ায় একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হন। এলাকায় একটি বহুতল ভবনে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। স্ত্রী গর্ভবতী। স্ত্রী জানিয়েছেন, স্বামী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ঘরেই আইসোলেশনে আছেন। তার শরীরে দুর্বলতা থাকলেও আর কোনও রোগের উপসর্গ নেই। এরই মধ্যে দিন কয়েক আগে ছাদে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সেখানে তাকে দেখে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা। তিনি এর প্রতিবাদও করেন। এরপরই প্রতিবেশীরা ফ্ল্যাটে ঢুকে তাদের ওপর চড়াও হয়। থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘরে ঢুকে ছেলের সামনেই জুতোপেটা করা হয় করোনা আক্রান্ত বাবাকে।
[৪] হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে ওই ব্যক্তির স্ত্রীও আক্রান্ত হন। এ সময় প্রতিবেশীরা বার বার তাদের ফ্ল্যাট ছাড়তে বলেন। পাটুলি থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই বহুতল ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে তারা। প্রতিবেশীদের দাবি, কোনও রকম শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। তবে কথা কাটাকাটি হয়েছে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, করোনা হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত ছাদে যাচ্ছিল ওই দম্পতি। ভবনের লিফটও ব্যবহার করেছে তারা।
[৫] ওই দম্পতির নামে এরইমধ্যে পাল্টা এফআইআর দায়ের করেছে ফ্ল্যাটের কয়েকজন বাসিন্দা। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের অন্যান্য স্থানেও করোনা রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। বেঙ্গালুরুতে করোনা রোগীর সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, একটি ফ্ল্যাটে করোনা রোগী আছে শুনে টিনের শিট নিয়ে গিয়ে সেই ফ্ল্যাট এবং পাশের ফ্ল্যাট সিল করে দেয় ওই পৌরসভার কর্মীরা।
[৬] প্রতিবাদ করেন করোনা রোগীর পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। পৌরসভায় ফোন করে তিনি গোটা ঘটনার কথা জানান এবং বলেন, এরপর কোনও কারণে বাড়িতে আগুন লাগলে পালানোও সম্ভব নয়। বেঙ্গালুরু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য দ্রুত ওই টিনের শিট খোলার ব্যবস্থা করে। করোনা রোগী এবং তার প্রতিবেশীর কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে। ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আতঙ্ক। রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে প্রায় সর্বত্র। বেশ কিছু জায়গায় তাদের বাড়ি ছাড়া করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। কোথাও করোনা রোগীদের হেনস্থার খবর পেলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :