শিরোনাম
◈ 'হাসিনার রায়ের দিন কেন বন্দরের চুক্তি স্বাক্ষর হল', প্রশ্ন আব্দুন নূর তুষারের (ভিডিও) ◈ প্রথম খেল‌তে নে‌মেই তা‌মি‌মের সেঞ্চু‌রি, ঢাকা - রাজশাহী ম‌্যাচ ড্র  ◈ রায়ের দিন কলকাতায় আ'লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের মিটিং (ভিডিও) ◈ ৫৩ ‘জুলাই যোদ্ধার’ গেজেট বাতিল ◈ হাসিনাকে যে কারণে ফেরত দেবে না ভারত ◈ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলছে  ◈ রাজধানীতে ১০ মাসে ১৯৮ হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি ◈ বড় জয়ে নারী কাবা‌ডি বিশ্বকাপ শুরু ভারতের ◈ আবেদনের ‘পাঁচ মিনিটেই’কুয়েতে মিলছে ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা ◈ সাত কলেজ নিয়ে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০২০, ০৬:০৪ সকাল
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২০, ০৬:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীন-বাংলাদেশ নতুন কোম্পানির চুক্তি স্বাক্ষর

বাশার নূরু : [২] দেশের বিভিন্নস্থানে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক মোট ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলতে চীনের সঙ্গে নতুন কোম্পানি গঠনের জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (রিনিউয়েবল)’ নামে কোম্পানিটি করা হবে।

[৩] বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনা কোম্পানি চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) আধাআধি মালিকানায় যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠনের লক্ষে চুক্তিটি (জেভিএ) করা হয়।

[৪] মঙ্গলবার এলডব্লিউপিজিসিএল-এর সভাকক্ষে এ বিষয়ে দুই কোম্পানির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়।

[৫] এনডব্লিউপিজিসিএল ও সিএমসির যৌথ মালিকানায় ২০১৪ সালে গঠিত ‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’ কয়লা ও বায়ুভিত্তিক প্রায় ২৭০০ মেগাওয়াটা ক্ষমতার একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ করছে। এখন কেবল নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে নতুন এই কোম্পানি গঠনের চুক্তি হল।

[৬] নতুন এই কোম্পানি সৌর ও বায়ুসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলবে দেশের বিভিন্নস্থানে।

[৭] বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

[৮] বিদ্যুৎ সচিব সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে পিডিবির চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন, এনডব্লিওপিজিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম এবং সিএমসি চেয়ারম্যান রাউন গুয়াংবক্তব্য দেন।

[৯] বর্তমানে দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের বেশিরভাগটাই আসে গ্যাস ও তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে।

[১০] দেশের ১৩৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ বাদে) ২০ হাজার ৩৮৩ মেগাওয়াট। এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬৩৮ মেগাওয়াট।

[১১] বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনায় ২০৪১ সালে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে।

[১২] জ্বালানি বৈচিত্রের কথা উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, এই বিদ্যুতের অন্তত ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসবে।

[১৩] প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অনুষ্ঠানে বলেন, পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হবে। অ-কৃষি জমির অপ্রতুলতার জন্য সৌর শক্তি ব্যবহার করে বড় আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা যাচ্ছে না। ছাদ সৌর বিদ্যুৎ এবং ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বর্জ্য ও বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগও এগিয়ে চলছে।

[১৪] বর্তমানে ২৩টি প্রকল্পের আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১ হাজার ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

[১৫] নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য এনডব্লিউপিজিসিএল ও সিএমসির মধ্যে ২০১৯ সালের ২৭ অগাস্ট একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। গত ৮ জুন এই জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পায়।

[১৫] নতুন এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। আর ১৬ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে এ কোম্পানি যাত্রা শুরু করবে।

[১৫] ২০১৪ সালের অক্টোবরে গঠিত বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি পটুয়াখালীর পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছে। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও শেষের দিকে।

[১৬] পায়রাতেই ২০২০ সালের মধ্যে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আরও দুটি ইউনিট নির্মাণ করবে এ কোম্পানি।

আর নতুন কোম্পানি বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (রিনিউয়েবল) যেসব স্থানে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে তার চারটির বিষয়ে প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি হয়েছে।

১. পাবনায় ৬০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে ২০৫ একর অকৃষি খাসজমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্প এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা বেস্টনী নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদনে নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

২. সিরাজগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের সম্ভ্যবতা যাচাই শেষ হয়েছে, ২১৪ একর জমি ইজারা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্প এলাকার জমি বা জীব-বৈচিত্র্যের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য পানির ওপর পাইলের মাধ্যমে প্যানেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে এ প্রকল্প থেকে উৎপাদন শুরুর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

৩. যমুনা ১২৫ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য পাবনার বেড়া উপজালায় ৪৪৩ একর অকৃষি খাস জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। উৎপাদন শুরুর লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর।

৪. পায়রায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। উৎপাদন শুরুর লক্ষমাত্রা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর।

এছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে আরও ১৬৫ মেগাওয়াট সৌর ও বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণের কাজ চলছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়