জবি প্রতিনিধিঃ [২] করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দেশের একমাত্র অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।হালবিহীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় মেসে। মেসভাড়া নিয়েই চরম সংকটে রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
[৩] শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ছিল দায়সারাভাব।অবশেষে শিক্ষার্থীদের তীব্র দাবির মুখে মেসভাড়া সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে ১সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কমিটি গঠনের পর ১মাস পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত কোন ফলাফলের দেখা পায়নি শিক্ষার্থীরা।
[৪]ভাড়া পরিশোধের জন্য বাড়িওয়ালাদের হুমকি ধামকিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে সহায়তা না পেয়ে উল্টো চাপে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
[৫] সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান সংকট নিরসনের জন্য গত ১০ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্রসংগঠনের ১৯ নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসনের কাছে সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির দাবি জানায়।পরদিন ১১জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দও মৌখিকভাবে শিক্ষাবৃত্তির দাবি জানায়।
[৬]শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন মেসভাড়া সংক্রান্ত সংকট নিরসনে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নূর মোহাম্মদ কে দিয়ে ১সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি গঠনের ২৩ দিন পর গত ৭জুলাই শিক্ষাবৃত্তির প্রস্তাবনা দেয় তদন্ত কমিটি।প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত আর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
[৭]গত ৬জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মোঃ আব্দুল বাকি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন।যেখানে মেসভাড়া সংকটে থাকা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রক্টর অফিস থেকে ফরম সংগ্রহের কথা বলা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে তাৎক্ষণিক সেটি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
[৮] এদিকে গত ২৫ জুন শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে ৫দফা দাবি জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিপাকে থাকা যেসব শিক্ষার্থী বাসা ছেড়ে দিচ্ছেন তাদের মালপত্র সরাতে দিনরাত সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
[৯]বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোন সমাধান না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। হুমকি ধামকি শুনে অনেকটা বাধ্য হয়েই ভাড়া পরিশোধ করছেন তারা,অনেকে আবার ছেড়ে দিচ্ছেন বাসা। মালপত্র নিয়েও পড়েছেন ঝামেলায়।
[১০]এ ব্যাপারে মেসভাড়া সংক্রান্ত সংকট নিরসনের জন্য গঠিত কমিটির একমাত্র সদস্য মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নূর মোহাম্মদ জানান,আমি শিক্ষাবৃত্তির প্রস্তাবনা দিয়ে রিপোর্ট সাবমিট করেছি।আমি বলেছি আগের চেয়ে ১০গুণ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার জন্য যার মেয়াদ হবে ১ বছর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকি এখন ব্যবস্থা নিবেন।
[১১]বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন,কমিটি একটা রিপোর্ট সাবমিট করেছে সেটা উপাচার্যের নিকট পাঠিয়ে দিয়েছি।তিনি দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।পরবর্তী কোন একাডেমিক মিটিং হলে সেখানে রিপোর্ট উপস্থাপন করা হলে সবাই এই ব্যাপারে মতামত দিবেন।
[১২] এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সাথে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :