শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ◈ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ: এডিবি ◈ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৪ সদস্য ◈ ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার তালিকা প্রকাশ করুন: মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৬ জুলাই, ২০২০, ০২:১৫ রাত
আপডেট : ০৬ জুলাই, ২০২০, ০২:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেজর খোশরোজ সামাদ: কোভিড-১৯ যুদ্ধে শহীদ জননীর সন্তানের গীতিকা

মেজর খোশরোজ সামাদ: [১] সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা যেদিন মায়ের সম্ভাব্য পরিণতির কথা জানিয়ে দিলেন সেদিন আমার যুদ্ধ নতুন করে শুরু হলো। যে করেই হোক, মাকে বাঁচাতে হবে। আইসিইউতে আমি মায়ের পাশে দাঁড়াই। টুকটাক কথা বলি। নিয়মিত ওষুধ-পথ্য খাচ্ছেন কিনা জিজ্ঞেস করি। মা আমাকে মনে করিয়ে দেন, আমি সুপারম্যান নই। এই ছোঁয়াচে ভয়াল ব্যাধি আমারও হতে পারে। আমি কী করে চলে যাই? মা, আমি যে তোমারই স্তন্যপান করা অর্বাচীন এক সন্তান।

[২] ‘আজ কেমন আছো, মা?’ প্রশ্নের উত্তর কৌশলে এড়িয়ে করোনা আক্রান্ত আমার বাবা আর বোনের আরোগ্য সম্ভাবনার কথা তিনি উৎকণ্ঠার সাথে জানতে চান। মায়ের রোগাক্লান্ত মুখচ্ছবিতে করোনা বিধ্বস্ত এক পরিবারের দুমড়ে মুচড়ে ফেলা মানচিত্র দেখতে পাই।

[৩] বিরলপ্রজ ওষুধ দরকার। আমি উন্মত্তের মতো মধ্যরাতে ঢাকা চষে ফিরি। প্লাজমা দরকার, আমি উন্মাদ হয়ে যাই। যে করেই হোক প্লাজমা যোগাড় করতেই হবে। নিজে চিকিৎসক হিসেবে সবকিছু বুঝলেও মায়ের চিকিৎসকদের রাতবিরেতে বারবার অধীর হয়ে ফোন করি।

[৪] যখন মায়ের লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হলো তখন আমি মায়ের পাশে। গ্রাফগুলো আর উঠছে না, নামছে না। ফ্ল্যাট। Our sweetest songs are those that tell of saddest thaught| আমি গ্রাফে মধুরতম সংগীতের স্বরলিপির আঁকিবুঁকি দেখতে পাই।

[৫] মাকে মরচুয়ারিতে রাখা হলো। মা তো কখনো একা ঘরে থাকেননি। উনি তো ভয় পাবেন। আচ্ছা, ওরা কি মায়ের সাথে আমাকে থাকতে দেবে?

[৬] মাকে সিএমএইচ মসজিদে জানাজা পড়ানো হলো। এই তো অল্প কদিন আগেই মায়ের সাথে সারাদিন কাটালাম। এক বিছানায় ঘুমালাম। তার শরীরে কেমন মা মা গন্ধ। তিনি খাটিয়াতে শুয়ে আছেন। আমি দূর থেকেও সেই মা মা সুবাসিত গন্ধ আবার পেলাম।

[৭] মাকে বনানীতে সামরিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হলো। আমার শরীরে তখন হাজার হাতির শক্তি। মাটির জমিনে মাকে নিজ হাতে শুইয়ে দিলাম। কবর মাটি দিয়ে ঢেকে দিচ্ছি। কে বলেছে, এটা কবর? এখানে মা ঘুমাবেন। ওরা কারা? যারা মায়ের লাশ রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়?

[৮] শিশুকালে মা গল্প বলে আমায় ঘুম পাড়াতেন। আজ আমি মাকে যুদ্ধজয়ের গল্প বলবো। মা তুমি জীবনের অনেক সময়ই জায়নামাজে কাটিয়েছো। জানো মা, মহামারীর মৃত্যু সেতো শহীদের মৃত্যু। আমি সেই শহীদ জননীর নাড়ি ছেঁড়া ধন। আমার কীসের ভয়? ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়